১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস কি, এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য রচনা
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস কি? বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য এর রচনা অনেকের অজানা। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। আমি আপনাদের এই পোস্টের মাধ্যমে জানাবো, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস কি: বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত।
ভূমিকা
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস কি অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। এমনকি ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রচনা অনেকেই জানেন না। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এই দিনটি হাজারো কষ্টের এবং লক্ষ লক্ষ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়। দীর্ঘ নয় মাস রক্ত ক্ষয়ী যুদ্ধের শেষে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এর দেখা মেলে। সুতরাং বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রচনা গভীরতা ব্যাপক। আমি আপনাদের জানাতে পোস্টে আলোচনা করেছি, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস কি এবং বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রচনা সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে প্যাকিং এর কাজ ঘরে বসে 2024
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস কি?
১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির মহান বিজয় দিবস। অনেক ত্যাগের মাধ্যমে, লক্ষ লক্ষ বাঙালির রক্তের বিনিময়ে, পাওয়া ১৬ ডিসেম্বর এই মহান বিজয় দিবস ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় আছে এবং থাকবে। এই স্মরণীয় দিনটি অনেকের মনে প্রশ্ন তুলে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস কি? সুতরাং নিঃসন্দেহে বলা যায় ১৬ ডিসেম্বর বাংলার ইতিহাসের এক স্মরণীয় বিজয় দিবস। এটি লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনা এক ১৬ই ডিসেম্বর যা বিজয় দিবস নামে পরিচিত ।
বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রচনা
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের সকল গুরুত্ব ও তাৎপর্যের রচনা পড়তে গেলে শেষ করা যায় না। বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের রচনা অত্যান্ত মর্মান্তিক এবং লৌহমর্ষক। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের প্রায় ৫৩ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। এই দিনটি ইতিহাসের এক বাংলাদেশের স্বাধীন সার্বভৌম অভ্যুত্থানের স্মরণীয় দিন।
দীর্ঘ নয়মাস রক্ত ক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলার বীর বাঙালিরা ছিনিয়ে নিয়ে আসে লাল সবুজের পতাকা। পাখ হানাদার বাহিনী ১৬ই ডিসেম্বর এই দিনে বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনগণের অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন এর অবসান ঘটে। এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনীরা বাংলার বীর বাঙ্গালীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। সেইসাথে মুক্তি পায় বাংলার মানুষ। আমারা ইতিপূর্বে জানতে পেরেছি ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস কি সম্পর্কে। জেনে নিন বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রচনা।
৫২ বছরের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার বিশ্লেষণে অনেক মুক্তিযোদ্ধা অপরাধী দের শাস্তি বিচার সম্পন্ন করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশ এর মানুষ সশস্ত্র চিত্রে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধ করা লাখো শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে। লাখো শহীদের ও দেশের সাধারণ বাঙালির রক্তের বিনিময়ে আমরা বেশি স্বাধীন সার্বভৌমত্বের রাষ্ট্র।
সেই থেকে শুরু হয় আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাঙালি জাতির। ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দেশে/বিদেশে পালন করা হয় বিভিন্ন কর্মসূচি।এছাড়াও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সকাল থেকে পতাকা উড়িয়ে জাতীয় সংগীত এর মাধ্যমে শহীদদের সম্মান প্রদান করা হয়। এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, স্কুল-কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক, ক্রিয়া-কলাপের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এই দিনে রেডিও ও টেলিভিশনের বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার-প্রচারণা করা হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান। মসজিদ, মন্দির, গির্জা উপাসনায় করা হবে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার। সূর্য উদয়ের সাথে সাথে তপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় বিজয় দিবসের সকল কর্মসূচি। ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ সাভারে অবস্থিত এবং শহীদ মিনারে পড়ে সাধারণ মানুষের ঢল।
১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে স্বাধীনতার সূর্যের অস্তমিত ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সূর্যের উদয় দেখা মিলে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের সূচনা হয়েছিল। এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর ৯১ হাজার ৫৪৯ জন সেনা সদস্য আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এর এই দিনে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী তার আত্মসমর্পণের দলিল স্বাক্ষর করে তৎকালীন মিত্র বাহিনীর কমান্ডার লেপেরেন্ট জেনারেল জগজিত সিং অরোরার কাছে জমা দিয়েছিলেন।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জন করা ১৬ই ডিসেম্বর এর পাক বাহিনীর থেকে অর্জন করা বিজয় দিবস এর মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়। বিজয় দিবসের সেই মহানায়ক শেখ মজিবুর রহমানের হাত ধরে এই বিজয় দিবস অর্জন করতে পেরেছে বাঙালি যোদ্ধারা।
তৎকালীন ইংরেজদের শাসনামলে বাঙালি বহুবার রক্ত দিয়েছে। জীবনে শেষটুকু দিয়ে লড়াই করেছেন শোষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে। প্রায় ২০০ বছরের বেশি ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তদানকারী হচ্ছে বাঙালি জাতি। এরপর ১৯৪৭ সালের পাকিস্তানের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পিছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বাঙালি জাতি। তৎকালীন এই ছিল পাকিস্তানের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মহানায়ক।
কিন্তু বাঙ্গালীর স্বপ্ন চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। কারণ সব শোষণ বঞ্চনা-নিপীড়ন নির্যাতন এর জন্য ইংরেজদের বিতাড়িত করেছিলেন ঠিক সেই নির্যাতনের শিকার হয়েছিল পাকিস্তানীদের কাছে। বাঙ্গালীদের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক এমনকি ভূখণ্ড তাবেদারও বঞ্চিত করতেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সেই সাথে বাঙালিরা এক বুক আশা নিয়ে শুরু করে নতুন সংগ্রাম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে।
তারপর ওই ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬৬ ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইতিহাসের আরেক সূচনা। 1970 সালে শুরু হয় নির্বাচন নির্বাচনে ফুটে ওঠে আরেক চূড়ান্ত রূপ শুরু হয়ে যায় যুদ্ধের আরেক নতুন অধ্যায় পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ঐতিহাসিক ভাষনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম” বজ্র কন্ঠে আওয়াজ তুলেন। এই ভাষণটি বাঙালি জাতির মনে প্রাণে জাগিয়ে তুলে মুক্তির সম্ভাবনা এমনকি তাদের আত্মবিশ্বাসকে জাগ্রত করে।
মধ্য দিয়ে তৎকালীন সময়ে পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালির যোদ্ধাদের কাছে পরাজয় মেনে নিয়ে প্রকাশ্যে আত্মসমর্পণ করেন। সেই সাথে মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীন সার্বভৌমত্ব, ভূমি ও মাটি, সাধারণ জনগণ, পশু পাখি, ইত্যাদি। দেশের জনগণ মেতে উঠে মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর পালনের উন্মাদনায়, সারাদেশ ছেয়ে যায় লাল সবুজে।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা
বাংলাদেশ বাঙালি জাতির গর্ব, আর মহান বিজয় বাঙালির অনুপ্রেরণা। ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত করে। মহান বিজয় দিবসের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া সকল শহীদদের প্রতি আমাদের সকল বাঙালির বিনম্র শ্রদ্ধা রয়েছে।
আমাদের বাংলাদেশের প্রিয় মাতৃভূমির রক্তে রঞ্জিত স্বাধীনতার আজ 52 বছর পেরিয়ে ৫৩ বছরে পদার্পণ করেছে। বাংলাদেশের সকল ধর্ম, বর্ণ জাতি বর্গকে জানাই মানিমেকারআইটির পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আরো পড়ুনঃ আজকের ১০০ ডলার বাংলাদেশের কত টাকা 2024
প্রশ্ন ও উত্তর: ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস
বিজয় দিবস আমরা কেন পালন করি?
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর তারিখের বাংলাদেশের মানচিত্র একটি স্বাধীন ও সার্বভৌমত্বের ভূখণ্ড হিসেবে পরিচিত লাভ করে। এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনীরা আত্মসমর্পণ করে এবং বাঙালি বাহিনী বিজয় অর্জন করে। হাজারো শহীদদের বিনিময়ে অর্জন হয় বিজয় দিবস। শহীদদের অবিস্মরণীয় এবং শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এমনকি বাঙ্গালীদের বীরত্ব স্মরণে বিজয় দিবস পালন করা হয়।
১৬ ডিসেম্বর স্মরণীয় কেন?
দীর্ঘ নয় মাস ৩০ লক্ষ মানুষের রক্ত ক্ষয়ী যুদ্ধের পরে অর্জন হয় বিজয় দিবস যা ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর তারিখে আত্মসমর্পণ করেন। সে থেকে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয় এবং দিনটি ইতিহাসের পাতায় ও বিস্মরণীয় হয়ে আছে এবং থাকবে।
বিজয় দিবস কি বার ছিল?
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৫:২৫ মিনিটে ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানে আত্মসমর্পণ করেন। বাঙ্গালীদের বিজয় আসে বৃহস্পতিবার হয়।
বিজয় দিবস এর অর্থ কি?
পাকিস্তানিদের হাত থেকে বাঙালি জাতির নিপীড়ন নির্যাতন শাসন ও শোষণ এর হাত থেকে রক্ষা করে বাঙালির সহযোদ্ধারা। বাঙালি জাতির কাছে আত্মসমর্পণ করেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। তখন থেকে বিজয় দিবসের সূচনা হয়।
বাংলাদেশ বিজয়ের কত বছর?
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার মাধ্যমে বাঙ্গালীদের বিজয় চূড়ান্ত হয়। সেই হিসেবে বর্তমানে বাংলাদেশ বিজয়ের প্রায় ৫৩ বছর এর দাঁড় প্রান্তে পৌঁছে গেছে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হয় কত সালের কত তারিখে?
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ। অনুষ্ঠানিকভাবে এই দিনে পাকিস্তানদের থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন ঘোষণা করা হয়।
উপসংহার
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস কি? এবং বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রচনা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি, উক্ত বিষয় ১৬ই ডিসেম্বর এর মহান বিজয় দিবস কি এবং এই বিজয় দিবসের সকল গুরুত্ব ও তাৎপর্য রচনা বিস্তারিত জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন। উক্ত বিষয় সম্পর্কে আরো তথ্য জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। আমরা আপনাদের কমেন্টের সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়ে থাকি ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url