গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাচ্ছেন খামুন! খাওয়ার পূর্বে জেনে নিন পুষ্টি উপাদান ও উপকারিতা কি কি? গর্ভাবস্থায় নিয়মিত লাল শাক খাওয়ার বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। আজকের পোস্টে আমি আপনাদের জানাবো, গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
লাল শাক কম দামের হলেও গর্ভাবস্থায় খাওয়ার ফলে এর প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। প্রায় বারো মাসি এই লাল শাক বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়। অন্যান্য শাকের তুলনায় লাল শাক শরীরের রক্ত উৎপাদন এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যা গর্ভাবস্থায় খাওয়ার ফলে রক্তশূন্যতা দূর করে। আজকের পোস্টে আমরা জানতে পারবো, গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
প্রিয় বন্ধুরা, আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানবো গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সকল তথ্য। গর্ভাবস্থায় ভাতের মাড় খাওয়ার যেমন স্বাস্থ্যের জন্য অধিক উপকারে তেমনি লাল শাক খাওয়ার অধিক উপকারিতা আছে।
গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার যত স্বাস্থ্য উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় পরিমাণ মতো লাল শাক খাওয়ার ফলে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা সহ বিভিন্ন ভিটামিন এই চাহিদা পূরণ করে। লাল শাকের যে পুষ্টি রয়েছে চা পরিমাণ মতো খাওয়ার ফলে দেহের আয়রন, ক্যালসিয়াম ইত্যাদির পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। শুধু গর্ভাবস্থায় খেলে উপকারিতা পাওয়া যায় তা নয় বরং বাচ্চারা ছোট-বড় ছেলে-মেয়ে ভয়ে খেতে পারে।
আর এই লাল শাক খাওয়ার ফলে তাদের দ্রুত হজম শক্তি কি করে এবং খাওয়ার ফলে অধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। সুতরাং চলুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত। এখানে গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা তুলে ধরা হলো:
- ফলিক এসিডের উৎস লালশাক: ফলিক এসিড সমৃদ্ধ সাগের নাম হচ্ছে লাল শাক, যা গর্ভাবস্থায় খেলে গর্ভের নবজাতকের বা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে এবং উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ।
- লাল শাকের আয়রন: লাল শাকের প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায় যা গর্ভবতী মায়েদের রক্তশূন্যতা দূর করে।
- লালশাক ভিটামিন কে এর উৎস: ভিটামিন কে এর প্রধান উৎস হচ্ছে লাল শাক। সঠিক পরিমাণে লাল শাক খাওয়ার ফলে ভিটামিন কে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং রক্তে অনুচক্রিকা বৃদ্ধি করে। যার রক্তের জমাট বাঁধতে সাহায্যকারী।
- ভিটামিন সি এর উৎস লাল শাক: লালশাক ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার। লাল শাক খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের এর চাহিদা পূরণ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এমনকি আয়রন শোষণের ক্ষমতা বাড়ায়।
- লাল শাক ফাইবারের উৎস: দেহের ফাইবার বৃদ্ধি করে লাল শাক, যা খাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- লাল শাকে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর গুণ: শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে বাড়িয়ে দেয় লালশাক। ফ্রি রেডিক্যাল ক্ষতিকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করে দেহকে লালশাক।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে লাল শাক: লাল শাড়ি আছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী উপাদান যা খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- সুস্থ ত্বক: গর্ভাবস্থায় নির্দিষ্ট পরিমাণে লাল শাক খাওয়ার ফলে ভিটামিন এ ও সি পাওয়া যায়, যা খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যকর ত্বক এবং শুষ্ক ত্বকের প্রতিরোধ করে।
- পুষ্টির ভারসাম্য রক্ষা করে লাল শাক: লাল শাকে আছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম যা খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে।
- লাল শাক স্বাভাবিক প্রসাবে সহায়ক: লাল শাক এর সকল পুষ্টি উপাদান ও পুষ্টিগুণ গর্ভাবস্থায় খাওয়ার ফলে সুস্থ গর্ভধারণ ও স্বাভাবিক সুস্থ সম্ভাবনা বাড়ায়।
- শিশুর মেধা বিকাশ এবং শরীর গঠনে লাল শাক: শিশুদের মেধাবিকাশে এবং তাদের শরীরের অঙ্গ পতঙ্গ গঠনে ভূমিকা রাখে লালশাক। গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ায় প্রতিটি শিশুদের শারীরিক গঠন হওয়া মেধার বিকাশ ঘরেতে সাহায্য করে।
- লাল শাক কিডনির সমস্যা দূর করে: কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগী যদি নিয়মিত লাল শাক খায় তাহলে কিডনি সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে পারে। কিডনিতে থাকা ক্ষতিকর এবং নষ্ট পানি অপসরণে সাহায্য করে এবং কিডনি সচল রাখতে ও কিডনি কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে লাল শাক।
- হার্ট সুস্থ রাখে লাল শাক: গর্ভাবস্থায় প্রতিটি গর্ভধারিনী মায়েদের যদি লাল শাক খাওয়ানো হয় তাহলে মা ও নবজাতকের হার্ট ভালো অসুস্থ রাখতে সহায়তা করে। লাল শাক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফলে হার্ট সুস্থ থাকে এবং হার্ট অ্যাটাক করার ঝুঁকি কমায়।
- লালশাক দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে: লাল শাক গর্ভবতী মায়েদের খাওয়ালে তাদের পেটের শিশুর দৃষ্টিশক্তি উন্নত এবং তীক্ষ্ণ হয়। তবে গর্ভবতী মা সকলে লালশাক খেলে তাদের চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি পায়। লাল শাকের ভিটামিন এ, বিটা ক্যারোটিন, জিয়া জেনন্থিন, এন্টি এক্সিডেন্ট যা চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং রাতকানা রোগের সম্ভাবনা কমায়।
- লাল শাক হাড়কে শক্ত ও মজবুত করে: গর্ভাবস্থায় যদি কোন মা লালশাক তাই তাহলে তার পেটের নবজাতক এর আর শক্ত ও মজবুত হয়।
লাল শাক গর্ভাবস্থায় খাওয়ার ফলে কি হয়?
লাল শাক খেলে গর্ভবতী মায়েদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। যখন কোন শিশু বা গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় অপারেশন করার পর দেহের রক্তের ঘাটতি পরে। তবে যদি নিয়মিত পরিমাণে খেতে পারে তাহলে রক্তের ঘাটতি পূরণ করে লালশাক। শিশুদের বিকাশের সময় তাদের অঙ্গ প্রতঙ্গের বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় পোষ্টের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রন, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদির পূরণে সহায়ক হচ্ছে লাল শাক।
গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মায়ের জন্য লাল আগের অধিক উপকারিতা আছে। যা গর্ভাবস্থায় খাবার ফলে গর্ভবতী মায়ের সহ শিশুদের ছেলে মেয়ে উভয়ের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়াও যখন ৪০ বছরের বেশি হয়ে যায় তখন রক্তের ঘাটতি দেখা দেয় অনেকের ক্ষেত্রে। এমন অবস্থায় দেহের হাড় ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পুরুষদের তুলনায় নারীদের হাড় ক্ষয় বেশি দেখা যায়। তাই হার ক্ষয় রোধ করে লালশাকের আয়রন, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, ইত্যাদি পোস্ট উপাদান।
এমনকি যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করে, গর্ভবতী নারী, মাতৃদুগ্ধ পান করা এমন নারীদের, সকল খেলোয়ারদের, নিত্য শিল্পীদের, নিয়মিত যারা ব্যায়াম করে তাদের খাওয়া প্রয়োজন লাল শাক। এসব কাজ করা ব্যক্তিদের যে ঘাটতি দেখাতে তা লাল শাক খাওয়ার ফলে পূরণ হয়। সুতরাং তাদের জন্য উপযুক্ত খাবার হতে পারে লাল শাক।
লাল শাক সংরক্ষণ পদ্ধতি
লাল শাক পচনশীল একটি স্বাদ যা দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সুতরাং লাল শাক রান্না করার পর টাটকা অবস্থায় খাওয়া উত্তম। ফ্রিজে লালশাক সংরক্ষণ না করার চেয়ে রান্না করার সাথে সাথে যত তাড়াতাড়ি খাওয়া যেতে তত ভাল। এছাড়াও ফ্রিজে সংরক্ষণ করা লাল শাক সহ অন্যান্য খাবারেও বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া জমতে পারে যা পেটের জন্য ক্ষতিকর।
লাল শাক এর বৈজ্ঞানিক নাম কি?
লাল শাক এর Amaranthus Oleraceus হচ্ছে বৈজ্ঞানিক নাম। লাল শাক কোন অঞ্চলের শাক যা যে কোন অঞ্চলে জন্মায় এবং লাল শাক নামে পরিচিত। এটি একটি দেশীয় সুস্বাদু শাক যা খাওয়ার ফলে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধান এবং শারীরিকভাবে সুস্থ জীবনযাপন করতে সহায়তা করে। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে এবং এর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে নিয়মিত লাল শাক খাওয়ার অভ্যাস করুন।
লাল শাক চাষ করার পদ্ধতি
লাল শাক অঞ্চলের যে কোন স্থানে চাষ করা যায় যা দেশে সব সময় লাল শাক পাওয়া যায়। লালশাক চাষ করার জন্য লম্বা পদ্ধতি রয়েছে তা মেনে চাষ করলে অধিক ফলন পাওয়া যায়। তবে লাল শাক চাষ করতে অতিরিক্ত সার বা কীটনাশক, বাড়তি খরচ না করলেও চলে। লালশাক চাষ করার কিছু সাধারণ পদ্ধতি হলো:
- প্রথমে লাল শাক চাষের জন্য উর্বর মাটি দোআঁশ মাটি নির্বাচন করতে হবে। তবে লক্ষ রাখতে হবে নির্বাচন করা মাটিতে ৬ থেকে ৭ হলে ভালো হয়।
- মাটি প্রস্তুত করার জন্য ভালোভাবে চাষ করুন এবং মাটির অম্লত্ব দূর করতে কম্পোষ্ট অথবা গোবর সার করতে পারেন।
- ভালো এবং গুণগত মান সম্পূর্ণ বীজ নির্বাচন করা উত্তম। বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন প্রকার লাল শাকের বীজ পাওয়া যায়।
- লাল শাক বপন করার জন্য এক থেকে দুই সেন্টিমিটার মাটির গভীরে ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে লালশাকের বীজ বপন করুন।
- মাটির প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী লাল শাকের জমিতে পানি শেষ দিন। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে অতিরিক্ত পানি হলে লাল শাকের গাছের গোড়া পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- প্রয়োজন অনুযায়ী জৈব সার বা গো বসার প্রয়োগ করতে পারেন।
- জমির আগাছা তুলে ফেলুন এতে লাল শাকের গাছ দ্রুত বৃদ্ধ হবে।
- লালশাকের গাছের বিভিন্ন রকম রোগ বালাই পোকামাকড় দেখা যায়। তবে সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রয়োজন মত কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
- লাল শাক প্রায় ২০ থেকে ৩০ দিন পর সংগ্রহ করার উপযোগী হয়ে যায়। লাল শাক সংগ্রহ করতে পাতা কেটে অথবা গাছের গোড়া সহ তুলে সংগ্রহ করতে পারেন। তবে পাতায় কেটে সংগ্রহ করলে গাছ আরো বৃদ্ধি পাবে।
লালশাকের বীজের দাম কত?
লালশাকের বীর সাধারণত বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। একেক বীজের মূল্য একেক রকম। তবে লাল শাকের বীজ বিক্রি করা হয় প্রতি 10 গ্রামের 10 টাকা দরে। অর্থাৎ আপনি যদি ১০ গ্রাম ব্রিজ কিনেন তাহলে আসবে ১০ টাকা। ৫০ গ্রাম নিলে দাম হবে ৫০ টাকা। ১০০ গ্রাম লাল শাকের বীজের দাম হবে ১০০ টাকা। এছাড়াও বিক্রেতার উপর নির্ভর করে এবং স্থান অনুযায়ী লালশাকের বীজের দামের কম বেশি হতে পারে।
লাল শাকের পুষ্টি উপাদান
লাল শাক নানারকম পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ একটি শাক। যা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। লাল শাকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের উৎস এবং গুণাগুণ রয়েছে। নিম্নে লাল শাকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল পোস্টটি উপাদান সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
- ভিটামিন এ: লালশাকের ভিটামিন এ চোখের, ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নত করার জন্য এবং ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধি করতে ভূমিকা রাখে।
- ভিটামিন সি: ভিটামিন সি শরীরের বাদ দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বক সুস্থ রাখে।
- ফোলেট: লালশাকের হলেট শরীরের প্রয়োজনীয় কোষের বৃদ্ধি এবং ডিএনএ এর সংশ্লেষণ করতে সহায়ক।
- ভিটামিন কে: এটি হাড় শক্ত মজবুত করতে এবং রক্তে জমাট বাঁধার জন্য সহযোগিতা করে।
- আয়রন: আয়রন এর কাজ হচ্ছে রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করতে সহযোগী।
- ক্যালসিয়াম: এটি দাঁত এবং হাড়ের শক্ত ও মজবুত করার জন্য এবং সুস্থ সবল রাখতে সহায়ক।
- ম্যাগনেসিয়াম: এটি দেহের শক্তির উৎপাদন এবং মাংসপেশির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- এন্টিঅক্সিডেন্ট: লাল শাকের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা জিয়া জানথিন ও লুটাইয়েন চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখে।
- ফাইবার: লালশাকের ঢাকা ফাইবার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
লাল শাকের উপকারিতা কি কি?
লাল শাকের নানাবিদ উপকারিতা রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতাগুলো উল্লেখ করা হলো:
- লাল শাক বিভিন্ন পোস্টটি গুনে পরিপূর্ণ যেমন ভিটামিন এ, সি, কে ইত্যাদি ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।
- লাল শাকের প্রচুর পরিমাণে মিনারেল রয়েছে লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি উপকারিতা পাওয়া যায়।
- লাল শাক এর অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
- হৃদরোগের প্রতিরোধী কাজ করে লাল শাক। যার রক্তচাপ কমিয়ে হৃদরোগে ঝুঁকি কমায়।
- হজম শক্তি উন্নত ও বৃদ্ধি করতে সহায়ক লালশাক।
- লালশাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে লাল শাক।
- লাল শাক অস্বাস্থ্যকর কোষের বৃদ্ধি করে এবং প্রয়োজনীয় সুস্থ কোষ বৃদ্ধি করে।
- হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখে এবং শক্ত ও মজবুত করে লাল শাক।
- স্বাস্থ্যকর রক্তবৃদ্ধি এবং হিমোগ্লোবিনের স্তর বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে লালশাক।
- লাল শাক রক্তশূন্যতা দূর করে এবং দ্রুত রক্ত জমাট বাঁধতে সহযোগী।
লাল শাকের অপকারিতা
লালশাক সাধারণত স্বাস্থ্যের জন্য অধিক উপকারী তবে কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে অথবা ক্ষেত্র বিশেষে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারিতা দেখা দিতে পারে। নিম্নে লালশাক আর কিছু সম্ভাব্য স্বাস্থ্য উপকারিতা দেওয়া হল:
- লাল শাক এর পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি অক্সালেট এর পরিমাণ বেশি থাকায় শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ। অক্সালের সাধারণত ক্যালসিয়াম এর সাথে যুক্ত থাকে কিডনিতে প্রবেশ করে কিডনির পাথর তৈরিতে সাহায্য করতে পারে।
- লালশাকে ফাইটেট এবং অক্সালেট পরিমাণে বেশি থাকায় অন্যান্য পুষ্টি উপাদান গুলো শোষণে ব্যাঘাত ঘটায়। বিশেষ করে ক্যালসিয়াম এবং আয়রন শোষণে ব্যাঘাত ঘটে।
- কিছু ব্যক্তির পূর্ব থেকেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে। তারা যদি লাল শাক খায় তাহলে তাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বৃদ্ধি হতে পারে। সুতরাং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে এমন ব্যক্তির লাল শাক এড়িয়ে চলা উত্তম।
- লাল শাকের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে থাকায় আপনি যখন লালশাক গ্রহণ করছেন তখন ভিটামিন কে এর চাহিদা পূরণ হচ্ছে। যদি কেউ ভিটামিন কে মেডিকেশন গ্রহণ করে সাথে লাল শাক খায় তাহলে তাদের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টির কারণ হতে পারে।
- এলার্জি সমস্যা আছে তারা যদি লাল শাক খায় তাহলে তাদের এলার্জি বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এলার্জি আছে এমন ব্যক্তিদের না খাওয়াই উত্তম। কেননা লালসাকে প্রচুর পরিমাণে এলার্জি থাকে।
লাল শাক সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর
গর্ভাবস্থায় লাল শাক কি হয়?
গর্ভাবস্থায় লাল শাক খেলে গর্ভধারিনী মায়ের এবং পেটের নবজাতক এর নানা রকম পুষ্টি উপাদান সহ স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। এরমধ্যে নবজাতকের বৃদ্ধি এবং তার বিকাশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়া যাবে কি?
গর্ভকালীন সময়ে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে লাল শাক রয়েছে। সুতরাং লাল শাক খাওয়া গর্ভাবস্থায় অধিক উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে যে কোন খাবার খাওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেয়া উত্তম।
লাল শাক কি অ্যালার্জি বাড়ে বা হয়?
লাল থাকে প্রচুর পরিমাণে এলার্জি থাকে তবে এলার্জির পরিমাণ বলা যায় না। যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের লাল শাক না খাওয়ায় শ্রেয়।
লাল শাক খেলে কি ওজন বাড়ে?
লাল শাক অত্যন্ত পুষ্টি গুণান্বিত এবং ভিটামিনের ভরপুর একটি খাবার। যা খাওয়ার ফলে দেহের অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি হওয়ার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় অর্থাৎ খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায় না। শরীর এবং স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত লাল শাক খাওয়া উত্তম।
লাল শাক এর ইংরেজি নাম কি?
লাল শাক এর ইংরেজি নাম হচ্ছে Red Amaranth/Red Vegetables/Red Spinach/Elephant Head Amaranth যার পারিবারিক নাম Amaranth Thiya এবং এর দ্বিপদী নাম হচ্ছে Amaranth Geneticus.
সারসংক্ষেপ
আজকের পোস্টের আমাদের মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আশা করি আপনারা গর্ভাবস্থায় লাল শাক সম্পর্কে খাওয়ার সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এছাড়াও আপনাদের আপনাদের ওয়েবসাইটের এই পোস্টে জানানো হয়েছে লালশাকের অন্যান্য সকল বিস্তারিত তথ্য। বন্ধুরা আপনাদের যদি লাল শাকসহ অন্যান্য কোন প্রশ্ন জানার থাকে তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url