ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার ১২টি উপায়
শীতকালে বা গ্রীষ্মকালের উত্তপ্ত রোধের তাপমাত্রায় ত্বকের ফর্সা রং, উজ্জ্বলতা, মসৃণ হারিয়ে ফেলেছেন। নিস্তেজ হওয়া ত্বক ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা করা যায়। তাহলে জানতে হবে ফর্সা করার উপায়। আমি আপনাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে জানাবো, ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।
ফর্সা ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে গেছে, করতে হবে ত্বকের যত্ন ফিরে পাওয়া যাবে ফর্সা, উজ্জ্বল, সুস্থ ত্বক। ফর্সা ত্বক, ত্বকের উজ্জ্বলতার জন্য গ্রহণ করতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার ও পানি। সেই সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে ত্বক পরিষ্কার রাখতে। তাহলে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ত্বকের কোষগুলো পুনরোজ্জীবিত হবে, পূরণ হবে পানির ঘাটতি। আপনারা জানতে পারবেন, ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে।
পোষ্টেরসূচিপত্রঃপ্রিয় বন্ধুরা, আজকের পোস্টে আমরা জানবো ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে সকল তথ্য।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার ১২টি কার্যকরী উপায়
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল করার জন্য ত্বকের যত্ন এবং পুষ্টিকর খাবার ও ঘরোয়া উপাদান এর ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির ঘরোয়া উপাদান জানুন। ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য কিছু ঘরোয়া উপাদানের নাম হলো: গ্রীন আপেল, চিনি, মধু, বেসন, টমেটো, মুলতানি মাটি, সন্দুর, দই, কালোজিরা, মরিচের গুঁড়া, চা পাতা, ডালিম, সোয়াম বা জোয়ার, অলিভ অয়েল, পেঁয়াজ, ফেনুগ্রিক, মিষ্টি আলু, আঙ্গুর, সুগার, জিরা, কাঁচা দুধ, এভোকাডো, কাঁচা পেঁপে, বেসন, লেবুর রস, চন্দন, ইত্যাদি। চলুন জেনে নেয়, ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল করার ১২টি কার্যকারী উপায়। যা ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার উপায় গুলোর প্রধান উপায়।
উজ্জল ও ফর্সা ত্বকের জন্য পানি ও ফল
উত্তপ্ত রোধের তাপমাত্রায় ত্বকের সুস্থতার, শারীরিক সুস্থতা, পানি শূন্যতা পূরণে পুষ্টিবিদরা পানি পান করার কথা সর্বদা বলেন। এমন কিছু ফল আছে যেমন আপেল, আনারস, তরমুজ, শসা, বাঙ্গি, পেয়ারা, নাশপাতি, হানি দিও, গাজর, জাম্বুরা, জামরুল, কচি ডাব, আঙ্গুর, বিভিন্ন ফলের জুস, ঠান্ডা শরবত, কোমল তরল পানি ইত্যাদি দৈনিক খেলে সুস্থ ত্বক, উজ্জ্বল ত্বক, ত্বক ফর্সা করার কার্যকারী গুনাগুন পাওয়া যায়। ফলগুলো খাবার তালিকায় থাকলে চাহিদা পূরণ হবে পানির এবং অসংখ্য পুষ্টি উপাদানের। অবশ্যই মানতে হবে ঘরোয়া উপায়ে বানানো বিভিন্ন ফলের রস ও শরবত সর্বদা সুস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য উপযোগী।
আরো পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে ডাবের পানি খেলে কি হয়
ফর্সা ত্বকের যত্নে আনন্ড এর ব্যবহার
রাতে ঘুমানোর পূর্বে প্রায় পাঁচটি আমল ভিজিয়ে রাখুন। সকালে পানি ছেকে আনন্ড গুলো পিছে গুড়া করে দুধ যোগ করুন। উক্ত যৌগ পেস্ট কমপক্ষে ১৫ মিনিট ব্যবহার করে ধুয়ে নিন। ঘরোয়া পদ্ধতির এই উপাদান গুলোর মিশ্রণটি ত্বকের ফর্সা ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে, মৃত কোষ অপসারণ, এবং সুস্থ নরম ত্বক এর জন্য অব্যর্থ।
ঘরোয়া পদ্ধতির ফর্সা ত্বকের পুদিনা পাতা
পুদিনার প্রায় ২০ পাতা ভালোভাবে পিষে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে পরিষ্কার করে নিন। পুদিনা পাতার এ্যাসট্রিজেন্ট নামক পুষ্টি উপাদান যা ত্বকের ভাজ হয়ে যাওয়া, এবং ভেতর থেকে ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল করে। তবে আপনাদের যদি এলার্জি সমস্যা থাকে তাহলে পুদিনা পাতা ব্যবহার না করা আপনার জন্য উত্তম হবে।
ত্বক ফর্সা করার জন্য কলার ব্যবহার
উজ্জ্বল ফর্সা ত্বক পাওয়ার জন্য মধু,পাকা কলা, টক দই এর পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগালে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে এ ঘরোয়া পদ্ধতিটি নিয়মিত করতে হবে।
ফর্সা করতে লেবুর রস, আলুর খোসার ব্যবহার
ঘরোয়া পদ্ধতির আলুর খোসা এবং লেবুর রস নিয়ম মাফিক ব্যবহারে উজ্জ্বল ফর্সা ত্বক পাওয়া যায়। উপাদান দুটি একত্রে পিষে ত্বকে লাগাতে হবে।
উজ্জল ও ফর্সা ত্বকের জন্য এলোভেরা
পরিমাণ মতো এলোভেরার জেলির সাথে বাদাম এর গুড়া একটি পেস্ট তৈরি করুন। ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা ত্বকের জন্যতৈরি করা পেস্ট প্রায় ২০ মিনিট মুখের ত্বকে লাগিয়ে রাখেন। অতিবাহিত হওয়ার পরে টাটকা শীতল পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এলোভেরা এবং বাদামের সংমিশ্রণে উপাদান ত্বকের স্কিন ডিজিজ সমাধান করে, ময়লার স্তর,মুখের ব্ল্যাকহেডস দূর করে ত্বককে সুস্থ উজ্জ্বল ফর্সা করে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে গোলাপজল ব্যবহার
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করতে গোলাপজলের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকে গোলাপ জল ব্যবহারের জন্য খাঁটি দুধের সাথে মিশান। মুখের ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে রাতে ঘুমিয়ে যান। সকালে ঘুম থেকে উঠে নিরাপদ পানির ব্যবহারে ধুয়ে ফেলুন। যৌগটি ব্যবহারে ত্বক হবে নরম, পরিষ্কার ফর্সা, উজ্জল যা ত্বকের ভেতর থেকে কাজ করে। এটি ব্যবহারের দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে অব্যর্থ ফলাফল পাওয়া যায়।
আকর্ষণীয় ত্বকের যত্নে আম
আমের চোকা এবং দুধ একত্রে পেস্ট তৈরি করে মুখের ত্বকে, কালো হয় এমন স্থান যেমন গলা,ঘাড় ইত্যাদি স্থানে লাগিয়ে প্রায় দশ মিনিট রেখে ধুয়ে পরিষ্কার করুন। মিশ্রণটি নিয়মিত ব্যবহারে ত্বককে করে সুন্দর ফর্সা উজ্জ্বল।
উজ্জ্বল ত্বক পেতে টমেটো, হলুদ গুড়া ব্যবহার
পাকা টমেটো এবং লেবুর রস এর সাথে এক চিমটি হলুদ গুঁড়ার পেস্ট ত্বকে ব্যবহার করুন। আট থেকে দশ মিনিট পরে ভালোমতো ধুয়ে ফেলুন। যা ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা হয়। এছাড়াও টমেটো, হলুদ গুঁড়া স্বাভাবিক সুস্থ ত্বক, ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে, শুষ্ক ত্বকের সমাধান করে।
ত্বক ফর্সা রাখতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বজায় রাখা
গবেষণায় গবেষকদের মতে, ত্বকে লেগে থাকা বাইরের অনেক ধুলাবালি, ঘাম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের ক্ষতিকর জীবাণু যা ত্বকের জন্য ঝুঁকির কারণ। তাই ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ত্বক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতে ময়লাযুক্ত অপরিষ্কার ত্বক অপরিষ্কার করা যায়।
পরিষ্কার করতে শসার রস একটা চামচ পরিমাণ, লেবুর রস দুই থেকে তিন ফোটা একত্রে ভালো হবে মিশিয়ে নিন। ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন। উক্ত মিশ্রণ দিয়ে দিনে দুইবার সকালে বিকালে মুখমণ্ডল ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এছাড়াও মুখের নিষ্প্রাণ কোষগুলো কোষগুলো অপসারণ করার জন্য সপ্তাহে কমপক্ষে একবার হলেও এই ঘরোয়া পদ্ধতিটি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা রাখুন
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল করার জন্য পরিমাণ মতো মধু, টক দই, বেসন (এক টেবিল চামচ) শসা পানি ২ চামচ যোগ ও উপাদান তৈরি করুন। ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি করা উপাদানটি ত্বকে লাগান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরে কোমল পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। আপনি যদি ঘরোয়া পদ্ধতির এই উপায়টি প্রতি সপ্তাহে একবার করতে পারেন তাহলে আপনার ত্বক ফর্সা, উজ্জ্বল ও স্বাভাবিক সুস্থ ত্বকের পুনরুজ্জীবিত হবে।
উত্তপ্ত রোদ এর তাপমাত্রায় পড়ে গেছে এমন দাগ তুলতে মধু, মসুর ডালের গুড়া, গুড়া দুধ এবং পানি এক চামচ পরিমাণ, ডাবের পানি যৌগ মিশ্রণ প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট তোকে লাগিয়ে রেখে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফল পেতে ঘরোয়া উপায়টি প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে একবার করুন।
এছাড়াও ত্বক ফর্সা করার জন্য পরিমান মত বা এক টেবিল চামচ চন্দন কাঠের গুড়া, খাঁটি গরুর দুধ প্রায় ২০ মিনিট পর্যন্ত ফর্সা উজ্জ্বল ত্বক পেতে লাগিয়ে রাখুন এবং ধুয়ে ফেলুন উক্ত মিশ্রণটিও সপ্তাহে কমপক্ষে একবার ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল মিলবে।
ত্বকের অকার্যকর কোষের অপসারণ
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, খাটি গরুর দুধ, খাটি মধু, বেসন আটা পরিমাণ মতো একত্রে মিশিয়ে কমপক্ষে 20 মিনিট লাগিয়ে রাখার পর হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করে গোলাকার ভাবে ত্বকে মালিশ করা হলে পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করুন। এতে ত্বকের উপর পোড়া কালো দাগ দূর হবে এবং সুন্দর উজ্জ্বল ফর্সা নরম ত্বক উপহার দিবে।
আরো পড়ুনঃ লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
যদি সপ্তাহের ন্যূনতম একবার গাজরের রস, চাউলের আটা, নারিকেল তেল, লেবুর রস এর মিশ্রণ করে তোকে মালিশ করা যায় তাহলে ত্বক উজ্জ্বলতা ও ফর্সা হয়। ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করতে তৈরি করা উপায়গুলো ত্বকের মরা কোষের অপসারণ করতে এবং সুস্থ কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি যৌগ ব্যবহারের সতর্কতা
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার উপাদান গুলো ব্যবহারের পূর্বে যে সব বিষয় জেনে থাকা ভালো তা হচ্ছে- যদি আপনাদের কারো এলার্জির সমস্যা থাকে তাহলে যে উপাদানটিতে আপনার সমস্যা হতে পারে সে উপাদানটি ব্যবহার না করা উত্তম। সুতরাং উপাদানটি বাদ দিন। ত্বকের যত্নে যৌগ মিশ্রণ ব্যবহারে নিয়ম মেনে চলুন এবং অবহেলা না করা। ঘরের বাইরে বাইর হওয়ার পূর্বে অতিরিক্ত রোদ এগিয়ে চলার জন্য সান স্কিন ক্রিম সতর্কতার সাথে ব্যবহার করুন।
সারসংক্ষেপ
আজকের পোস্টের আমাদের মূল আলোচ্য বিষয় ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। আমি আশা করি, উক্ত বিষয় সম্পর্কে আপনারা সকল প্রকার তথ্য জানতে পেরেছেন সেই সাথে উপকৃত হয়েছে। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, আপনারা এই পোস্টটি পড়ে উপকার পেয়ে থাকলে আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে এবং ফর্সা করা সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে। পরিশেষে আমাদের ওয়েবসাইটের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url