সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আজকের পোস্টে আমি আপনাদের জানাবো, সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সকল তথ্য। প্রতিদিন সকালে সিদ্ধ ডিম অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাবার। সকালের সিদ্ধ ডিম খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। তবে কিছু সম্ভাব্য স্বাস্থ্য অপকারিতা সম্পর্কে জেনে সচেতন হওয়া আবশ্যক।
ভুমিকা
গবেষকদের বিভিন্ন গবেষণা জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে একটি করে সিদ্ধ ডিম খেলে স্বাস্থ্য উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়। শিশুদের দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধি এবং মেধা বিকাশের জন্য সিদ্ধ ডিমের পুষ্টিগুণ খুবই উপকারী। ছোট বড় সকলে আমরা সিদ্ধ ডিম খেতে পছন্দ করি কিন্তু অনেকেই জানিনা সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি? তাহলে জেনে নিন উক্ত বিষয় সম্পর্কে সকল প্রকার তথ্য।
এছাড়াও আজকের আর্টিকেলটিতে আরো জানতে পারবেন সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম, সিদ্ধ ডিম খেলে কি গ্যাস হয়, অর্ধেক সিদ্ধ ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা, কোন মুরগির ডিমে পুষ্টি বেশি। দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা, ব্রয়লার মুরগির ডিমের উপকারিতা, লাল ডিমের উপকারিতা, হাঁসের ডিমের উপকারিতা।
সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
সিদ্ধ ডিমে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ভিটামিন আছে। যা স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা দুইটাই আছে। আমরা এখন জানবো সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন
ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার সিদ্ধ ডিমঃ সিদ্ধ ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ আছে। ফলে উপাদানটি পাওয়ার হাউস হিসাবে কাজ করে। বিশেষ করে এতে ভিটামিন বি-১২ পাওয়া যায়। যা লোহিত রক্তকণিকা বজায় রাখে এবং সুস্থ স্নায়ু কোষ গঠন করে।
সিদ্ধ ডিম প্রোটিন এর উৎসঃ সিদ্ধ ডিম প্রোটিনের একটি মূল উৎস হিসেবে কাজ করে। প্রত্যেকটি সেদ্ধ ডিমে অ্যামাইনো এসিড থাকে যা এটিকে প্রোটিনের উৎস করে তুলে। পেশি তৈরিতে, হাড় মজবুত এবং শারীরিক অবস্থার উন্নতি করতে সিদ্ধ ডিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন সকালে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ফলে পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাবার চাহিদা কমিয়ে দেয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করে সিদ্ধ ডিমঃ আপনি যদি সকালে নাস্তায় সিদ্ধ ডিম খান তাহলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। গবেষণায় দেখা গেছে সিদ্ধ ডিম খেয়ে দিন শুরু করলে কার্বোহাইড্রেট এর মত ভারী খাবারগুলো তুলনায় ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে ভালো কাজ করে।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করেঃ কোলিন এর জন্য সিদ্ধ ডিম একটি প্রধান উৎস মস্তিষ্কের বিকাশ এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি এবং চোখের সুস্থ রাখেঃ বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে দৃষ্টিশক্তি এবং চোখ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আপনার যদি চোখের সমস্যা থাকে তাহলে নিয়মিত সিদ্ধ ডিম খেতে পারেন।
সিদ্ধ ডিম হার্ট সুস্থ রাখেঃ চিকিৎসকরা হার্টের সুস্থতার জন্য সিদ্ধ ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নিয়মিত সেদ্ধ ডিম খেলে ডিমের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড হার্টে রক্ত জমাট বাধার সমস্যা দূর করে, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে এবং সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান পালন করে।
ক্যান্সারের ঝুকি কমায সিদ্ধ ডিমঃ ক্যান্সার হলে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে নিয়মিত সিদ্ধ ডিম খেলে মরণব্যাধি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, ক্যান্সার প্রতিরোধে নতুন কোষ গঠন করতে সিদ্ধ ডিম সাহায্য করে।
দেহের শক্তি বৃদ্ধি করেঃ দ্রুত দেহের শক্তি বৃদ্ধির জন্য চিকিৎসকরা প্রতিদিন সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। সিদ্ধ ডিমের পুষ্টিগুলো দেহের শক্তি বৃদ্ধিতে দ্রুত কাজ করে।
হাড় শক্ত ও মজবুত করেঃ বিশেষজ্ঞরা গবেষণা করে পেয়েছেন নিয়মিত সিদ্ধ ডিম খাওয়ার ফলে শক্ত ও মজবুত, পেশি শক্তিশালী করতে এবং হাড়ের ব্যথা ভালো করে।
গর্ভবতী মায়ের জন্য ভালোঃ প্রতিটি গর্ভবতী নারীর পুষ্টিকর খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টির জন্য গর্ভবতী মহিলার প্রতিদিন কমপক্ষে একটি করে সিদ্ধ ডিম খাওয়া প্রয়োজন। এটি মা ও শিশু উভয়কে সুস্থ রাখতে অবদান রাখবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ প্রতিদিন সকালে সিদ্ধ ডিম খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ছোট ছোট রোগে আক্রান্ত হই। তাই এটি এড়িয়ে চলতে সকালে কমপক্ষে একটি করে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার অভ্যাস করা জরুরী।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সিদ্ধ ডিম ভূমিকা রাখে। সিদ্ধ ডিমের খারাপ কোলেস্টেরল এর তুলনায় ভালো কোলেস্টরেল পরিমাণ বেঁচে থাকে তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
জেনে নিন সিদ্ধ ডিমে কি কি পুষ্টিগুণ আছে
সিদ্ধ ডিম প্রয়োজনীয় পুষ্টি গুনে ভরপুর যা একটি সুষম খাদ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এটি উচ্চমানের প্রোটিন ভিটামিন এবং খনিজের অন্যতম উৎস। একটি সিদ্ধ ডিমের পুষ্টির উপাদান সমূহ উল্লেখ করা হলোঃ
ক্যালোরি-৭৮ গ্রাম
প্রোটিন-৬.৩ গ্রাম
মোট ফ্যাট-৫.৩ গ্রাম
স্যাচুরেটেড ফ্যাট-১.৬ গ্রাম
কোলেস্টেরল-১৮৬ মিমি
কার্বোহাইড্রেট-০.৬ গ্রাম
ভিটামিন এ ৬% DV
ভিটামিন বি ১২-৯% DV
রিবোফ্লাভিন বি২ ১৫% DV
সেলেনিয়াম-২২% DV
ফসফরাস-১০% DV ইত্যাদি।
সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম
ছোট থেকে বড় সবাই সিদ্ধ ডিম খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু অধিকাংশই সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম জানেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
- ডিম সিদ্ধ করার পূর্বে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
- পরিষ্কার ত্রে পরিবার মত পানি নিয়ে চুলায় সিদ্ধ করতে দিন।
- পানিতে এক থেকে দুই চিমটি লবণ দিতে পারেন।
- প্রায় ৮ থেকে ১০ মিনিট জাল দিন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে রেখে ডিম ঠান্ডা করে নিন।
- সিদ্ধ ডিমের খোসা ভালোভাবে ছাড়িয়ে ধুয়ে নিন।
- দৈনিক একটি করে সিদ্ধ ডিম খাওয়া ভালো।
সিদ্ধ ডিম খেলে কি গ্যাস হয়
সিদ্ধ ডিম খাওয়ার ফলে বেশিরভাগ মানুষের গ্যাসের সমস্যা না হলেও যাদের পূর্বে থেকেই গ্যাসের সমস্যা আছে তাদের সমস্যা হতে পারে। দিনে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। প্রোটিন দ্রুত হজম না হওয়ার কারণে পেটে দেশের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সমস্যা দিয়ে মূলত যেসব ব্যক্তির হজম শক্তি কম তাদের দেশে হয়ে থাকে। এছাড়াও ডিম যদি করার সময় অতিরিক্ত তেল মসলা ব্যবহার করা হয় তাহলে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার ফলে পেটের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
অর্ধেক সিদ্ধ ডিমের উপকারিতা
অর্ধেক সিদ্ধ ডিমের আরেক নাম হাফ বয়েল ডিম। এর অনেকগুলো স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। অর্ধেক সিদ্ধ ডিম বা হাফ বয়েল ডিম পেশি গঠন ও পেশি তৈরিকে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
- ভিটামিন এ, ডি, ই, বি১২ রিবোফ্লাভিন, লুটিন, কোলিন, ফসফরাস, সেলেনিয়াম, ইত্যাদি পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে।
- অর্ধেক সিদ্ধ ডিমের সাদা অংশে কম থাকে, স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী।
- রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল LDL এই মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পেটের সমস্যা দুর করে।
- দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখে, চোখের ছানি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- অর্ধেক সিদ্ধ ডিম কোলিন এর পরিমাণ বেশি থাকে, যা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- অর্ধেকসিদ্ধ ডিম হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি এবং হার শক্ত ও মজবুত করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে অর্ধেক সিদ্ধ ডিম কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
- গর্ভাবস্থায় অর্ধেকসিদ্ধ ডিম খেলে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ঠিক থাকে।
কোন মুরগির ডিমে পুষ্টি বেশি?
মুরগির ডিমের পুষ্টি উপাদান নির্ভর করে মুরগির লালন পালনের উপর।
দেশি মুরগিঃ সাধারণত দেশি মুরগি বাইরের খোলামেলা পরিবেশে লালন পালন করা হয়। তারা পোকামাকড়, কচি পাতা ও বিভিন্ন শস্য দানা খেতে পায়। ফলে দেশি মুরগির ডিমে অন্যান্য মুরগির চেয়ে পুষ্টির পরিমাণ বেশি থাকে।
ফার্মের মুরগিঃ ফার্মের মুরগি সাধারণত খোলামেলা পরিবেশে যেতে পাইনা। এরা নিয়ন্ত্রিত খাবার খায়। ফার্মের মুরগির ডিমে পুষ্টির পরিমাণ বেশি থাকলেও দেশি মুরগির ডিমের পরিবারের চেয়ে তুলনামূলক কম থাকে।
দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা
দেশি মুরগির ডিমে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়।অন্যান্য ডিমের মতই দেশি মুরগির সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় পাওয়া যায়। দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা হলোঃ
- নিয়মিত দেশি মুরগির ডিম খাওয়ার ফলে শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হয়।
- দেশি মুরগির ডিমে ভিটামিন এ,ডি,ই,বি১২ এবং খনিজ পদার্থ যেমন ক্যালসিয়াম, লোহা, ফসফরাস পাওয়া যায় যার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- দেশি মুরগির ডিম চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- দেশি মুরগির ডিম নিয়মিত খেলে হৃদরোগের ভোগে কমাতে সাহায্য করে।
- এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।
- দেশি মুরগির ডিমের ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে এবং শক্ত মজবুত করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে দেশি মুরগির ডিম।
- গর্ভবতী মহিলাদের জন্য দেশি মুরগির ডিম খুবই জরুরী। কারণ দেশি মুরগির ডিম খাওয়ার ফলের জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- শিশুদের দ্রুত বৃদ্ধি ও মেধা বিকাশের জন্য দেশি মুরগির ডিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রয়লার মুরগির ডিমের উপকারিতা
বয়লার মুরগির ডিম সাধারণত ফার্মের মুরগির ডিম নামে পরিচিত। বয়লার মুরগির ডিম পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাবার, এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
- ব্রয়লার মুরগির ডিমে 6 গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন থাকে যা দেহের প্রতিদিনের চাহিদার প্রায় 13% ঘাটতি পূরণ করে।
- প্রতিদিন ব্রয়লার মুরগির ডিম খাওয়ার ফলে ভিটামিন এ,ডি,ই,বি১২ এবং খনিজ পদার্থ যেমন ক্যালসিয়াম, লোহা, ফসফরাস দেহের ঘাটতি পূরণ করে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ব্রয়লার মুরগির ডিম।
- ব্রয়লার মুরগির ডিম ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে এবং খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমায়।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
- চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে।
- ব্রয়লার মুরগির ডিম হাড় শক্ত ও মজবুত করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
- বয়লার মুরগির ডিম এর ফোলেট গর্ভবতী মহিলাদের এবং শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে।
লাল ডিমের উপকারিতা
পুষ্টিগুনের দিক থেকে লাল ডিম এবং সেরকম কোন পার্থক্য নাই। তবে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কিছুটা পার্থক্য থাকতে পারে। লাল এবং সাদা ডিমের প্রোটিন ক্যালোরি চর্বি ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ সকল পুষ্টি উপাদান প্রায় সমপরিমাণে পাওয়া যায়। কিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে সাদা ডিমের তুলনায় লাল ডিমে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড সামান্য পরিমাণে বেঁচে থাকতে পারে। তবে এটি শরীরের উপর তেমন কোন প্রভাব পরবে না।
হাঁসের ডিমের উপকারিতা
মুরগির ডিম এর মতই হাঁসের ডিমের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ প্রায় সমপরিমাণ থাকে। তবে কিছু কিছু পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো মুরগির বা অন্য ডিমের তুলনায় হাঁসের ডিমে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। হাঁসের ডিম অন্যান্য ডিমের চেয়ে বড় হওয়ায় প্রোটিন, লোহা, ফ্যাটি এসিড, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ক্যালরি ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান পরিমাণে বেশি থাকে। যা এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সকল ডিম এবং সিদ্ধ ডিম খাওয়ার অপকারিতা
প্রতিটি খাবারের উপকারিতা ও অপকারিতা আছে। তেমনি সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আছে। বিশেষ করে যদি বেশি পরিমাণে সিদ্ধ ডিম খাওয়া হয় তাহলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকি সহ নানা অসুবিধা হতে পারে। তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেয় সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা এবং কি কি অসুবিধা হতে পারে বিস্তারিত।
সিদ্ধ ডিমে বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে। বেশি পরিমাণে ডিম খেলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তখন হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক রোগের ঝুকি বৃদ্ধি করে। হার্টের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। বেশি পরিমাণে ডিম খাওয়ার ফলে হার্টের সমস্যা এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তবে যারা হৃদরোগের সমস্যায় আছেন তাদের খাওয়ার বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক হওয়া উচিত।
অতিরিক্ত সিদ্ধ ডিম খাওয়ার ফলে কিছু লোকের হজম করা কঠিন হয়ে যায়। ফলে তাদের হজম জনিত ব্যাধি যেমন আই বি এস বা ইরিটেবল ভাওয়াল সিনড্রোম হয়। যা রোগীর জন্য খুবই যন্ত্রণাদায়ক। ডিমের এলার্জির পরিমাণ বেশি থাকায় এলার্জি রোগীদের জন্য বিপদজনক হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে হালকা ফুসকুড়ি এবং পেটে ব্যথা শুরু হয়।সিদ্ধ ডিম বেশি খাওয়ার ফলে অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি পায়। এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য ডিমের কুসুম খুবই বিপদজনক।
উল্লেখ্য যে হিসাব করতে গেলে প্রতিদিন সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার অপকারিতার চেয়ে উপকারিতা বেশি হবে। কারণ আপনি যদি নিয়ম মেনে পরিমান মত সিদ্ধ ডিম খান তাহলে অপকারিতা চেয়ে উপকারিতায় বেশি পাবেন। তবে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার ফলে যাদের বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে থাকে তাদের সিদ্ধ ডিম খাওয়ার জন্য সচেতন হওয়া আবশ্যক।
শেষ কথা
পরিশেষে বলতে হয় প্রতিদিন সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা অপরিসীম। আমরা আমাদের দেহের সুস্থতার জন্য, হাড় শক্ত ও মজবুত করতে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং শরীরের জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে নিয়মিত সিদ্ধ ডিম খেতে পারি। সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত করার জন্য আপনাদের জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url