মহরমের রোজা কত তারিখে - আশুরা কবে (২০২৪)
প্রিয় পাঠক, আপনি কি মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪ এবং মহররম মাসের ফজিলত আল কাউসার - আশুরা কবে ২০২৪ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের এই পোস্টটি নিশ্চয়ই আপনার জন্য।
কারণ আজকের এই আর্টিকেলটিতে মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪ এবং মহররম মাসের ফজিলত আল কাউসার সম্পর্কিত সকল তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাহলে চলুন মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪ এবং মহররম মাসের ফজিলত আল কাউসার - আশুরা কবে ২০২৪ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নি।
ভূমিকা
বিশ্বের মুসলিম জাতির মহরম মাস এবং আশুরা ধর্মীয় উৎসব। আশুরা ও মহরম মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পারবেন আশুরা ও মহরম মাসের গুরুত্ব এবং মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪ - মহররম মাসের ফজিলত আল কাউসার ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত। সুতরাং আর দেরি না করে মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪ ও মহররম মাসের ফজিলত আল কাউসার সম্পর্কে জানতে পোষ্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
মহরম কি?
হিজরী সালের প্রথম মাসের নাম মহরম মাস। মহরম মাস অন্যান্য চারটি মাসের থেকে এক পবিত্রময় একটি মাস। মহরম এর অর্থ হুরমত, যা বাংলায় সম্মানিত অথবা পবিত্র। এই মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মহরম মাস মূলত এক বেদনাদায়ক ঐতিহাসিক ঘটনার অর্থ বহন করে।
১০ই মহররমের ইতিহাস
১০ই মহররম অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক ঘটনার অর্থ বহন করে। ১০ই মহররম ইসলামিক ইতিহাসে শোকাহত একটি দিন। ১০ই মহররম আসবা নামে পরিচিত। ১০ই মহররম কে কেন্দ্র করে মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪ এবং আশুরা ও মহররম মাসের ফজিলত এসব প্রশ্ন উঠে আসে। ১০ই মহররমের এই দিনে মুসলিম জাতির শোকের ছায়া নেমে আসে।
আরো পড়ুনঃ জানাজার নামাজে সূরা ফাতিহা পড়ার বিধান
সালটি ছিল আরবি সালের ৬৮০ মহররম মাসের ১০ তারিখ এই দিনে ইরাকের কারবালার ময়দানে ইমাম হুসাইন (আঃ) ও তার সহযোগীদের সাথে ইয়াজিদ বাহিনীর (উমাইয়া শাসক) এর যুদ্ধ শুরু হয়। হুসাইন (আঃ) সহ ও তার অনুসারীদের মধ্যে ৭২ জন সদস্য ওই যুদ্ধে শহীদ হন। ঠিক তখন থেকেই মুসলিম জাতির জন্য ইসলামের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক ঘটনা স্মরণীয় হয়ে থাকে। ১০ই মহররম মুসলিম জাতির জন্য একটি শোকাহত দিন নয় মূলত এটি ন্যায়বিচার, সত্য আদায়ের জন্য সাহসী যোদ্ধার আত্মত্যাগের দিন।
মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪
মুসলমানদের জন্য মহরমের রোজা আশুরা রোজা রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। মহরম মাসে যে রোজা রাখা হয় থাকে মহরমের রোজা বা আশুরা রোজা বলা হয়। মহরমের রোজা বা আশুরার রোজা ইসলামের ইতিহাস স্মরণ করে ইরাকের কারবালার ময়দানে হযরত (ইব্রাহিম আঃ) তার অনুসারীরা শহীদ হন। শহীদদের জন্য বিশ্বের মুসলমান জাতি রোজা পালন করে। রোজা রাখার জন্য অনেকে জানতে চাই মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪ বা আশুরার রোজা কত তারিখে এর সঠিক তথ্য।
তাই আপনাদের জন্য মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪ আশুরার রোজা কত তারিখে এর সঠিক তারিখ এই পোস্টে লিপিবদ্ধ করলাম। যেন আপনারা মহরমের রোজা বা আশুরার রাখার সঠিক তারিখ জানতে পারেন। আশুরার রোজা কত তারিখে এবং মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪ এর সঠিক তারিখ হল মহরম মাসের ৯ এবং ১০ তারিখ। আবার মহররমের বা আশুরার রোজা রাখার দু-একদিন আগে মসজিদের মাইকে জানিয়ে দেয়া হয়।
আশুরা কবে ২০২৪
নতুন বছরের সাথে সাথে নতুনভাবে ইসলামের ইতিহাস গুলো স্মরণ করার জন্য মুসলিম বিশ্ব আশুরার রোজা বা আশুরা পালন করে। এই উদ্দেশ্যে আপনাদের জানাবো পবিত্র আশুরার রোজা কত তারিখে ও পবিত্র আশুরা কবে অনুষ্ঠিত হবে এর সঠিক তারিখ। পবিত্র আশুরা সরকারি ছুটির দিন। আশুরা পালন করা হয় মহরম মাসের ১০ তারিখে। অথবা ১৬ জুন ২০২৪ সন্ধ্যা থেকে ১৭ জুন ২০২৪ পর্যন্ত আশুরা অনুষ্ঠিত হয়।
মহরম কেন পালন করা হয়
মহররম মাস মূলত হিজরী সনের প্রথম মাস। মহরম মাস মুসলমানদের পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। মুসলিম বিশ্ব ইসলামের ইতিহাসের কিছু পূর্ণ ঘটনা স্মরণ করার জন্য হৃদয় রঞ্জিত ঘটনাগুলো স্মরণ করার জন্য পালন করে। মহরম পালনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলোঃ
- মহরম মাসে কারবালার ময়দানে সংগঠিত যুদ্ধে ইমাম হুসাইন (আঃ) ও তার সহযোগীর শহীদিকে সম্মাননা করার জন্য পালন করে।
- মুসলিম বিশ্ব মনে করে মহরমের এই দিনে হযরত মুসা (আঃ) ও ইসরাইল (আঃ) এর সন্তান ফেরাউনের বিরুদ্ধে জয় লাভ করে। তাদের এই সাহসিকতা স্মরণ করার জন্য মহরম পালন করা হয়।
মুহাররম মাসের আমল
আরবি বছরের প্রথম চারটি মাসের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাস হচ্ছে মুহাররম মাস। মুসলিম বিশ্বের জন্য মুহাররম মাস অত্যন্ত ফজিলত-সম্পূর্ণ একটি মাস। মুহাররম মাসের তাৎপর্যপূর্ণ কিছু আমার রয়েছে তাহলোঃ
- হযরত নূহ (আঃ) এর জাহাজ তুফান থেকে রক্ষা করা এবং তাঁর বিরোধী দের কিভাবে তুফানের ধ্বংস কররা হয়।
- ফেরাউনের ব্যভিচার থেকে হযরত মূসা (আঃ) ও বনি ইসরাঈল দের মুক্তি পাওয়ার ঘটনা।
- হযরত আইয়ুব (আঃ) এর ওপর আল্লাহর রহমত নাজিল।
- পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) কে পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর কুরবানী দেওয়ার ইচ্ছা পোষন।
- এছাড়াও মুহাররম মাসের আমল এর কিছু সুন্নত আমল হয়েছে তাহলো
- বেশি বেশি নফল নামাজ এবং তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
- আশুরার রোজা করা এবং আশুরার একদিন আগে এবং পরে রোজা রাখা।
- বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করা।
- ব্যক্তি সামর্থ্য অনুযায়ী বেশি বেশি দান করা।
মুহাররম মাসের আমল এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ আমল হচ্ছে বেশি করে কোরআন তেলাওয়াত করা।
আশুরা ও মহররম মাসের ফজিলত আল কাউসার
মহররম মাসের ও আশুরার ফজিলত আল কাউসার এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম নিচে মহরম মাসের ফজিলত আল কাউসার ও আশুরার গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
মহররম মাসের ফজিলত আল কাউসার
- হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এর একটি হাদীসে বর্ণনা করেন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন রমজান মাসের পরের মাস মহররমের রোজা হল সর্বশ্রেষ্ঠ। (জামে তিরমিজি ১-১৫৭, সহীহ মুসলিম ২-৩৬৮)
- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমজান মাসের রোজা এবং এবং আশুরার রোজা যেকম গুরুত্বের সঙ্গে রেখেছেন অন্য সময় তা রাখেননি। (সহীহ বুখারি ১-২১৮)
- অশ্রুসিক্ত বেদনাদায়ক ও নিষিদ্ধ চারটি মাসের মধ্যে মহরম মাস একটি। মহরম মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ করা হয়। রজব, জিলকদ, জিলহজ, ও মহরম এটা কি মাস মূলত মুসলিম জাতির জন্য শিক্ষনীয় মাস।
আশুরার গুরুত্ব
ফেরাউনের জুলুম থেকে মহান আল্লাহ তায়ালা হযরত মূসা (আঃ) ও বনি ইসরাঈল দের রক্ষা করেছিলেন মহরম মাসের ১০ তারিখে। সুতরাং মহরম মাসের ১০ তারিখ (আশুরা) মুসলিম জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্যপূর্ণ মাস।
মহরম মাসের ১০ তারিখে ইরাকের কারবালার ময়দানে হযরত ইমাম হোসাইন (আঃ) ও তার সহ যোদ্ধারা শহীদ হন। হযরত ইমাম হোসাইন (আঃ) ও তার সহ যোদ্ধাদের স্মরণ করতে পবিত্র আশুরা মহররমের মাসের ১০ তারিখে পালন করা হয়।
মহরমের ও আশুরা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
প্রশ্নঃ আশুরা আর মহরম কি এক?
উত্তরঃ আশুরা আর মহরম সমান অর্থ বহন করে। সাধারণত মহরম মাসের ১০ তারিখ আশুরা বলে।
প্রশ্নঃ হাদীসে মুহাররম মাসকে কী বলা হয়েছে?
উত্তরঃ হাদীসে মুহাররম যুদ্ধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে মাসকে নিষিদ্ধ মাস বলা হয়। মুহাররম মাসে বেশি বেশি করে কোরআন তেলাওয়াত, আদায় এবং তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ মহরমের সুন্নি কি হয়েছে?
উত্তরঃ মহরমের 10 তারিখ বা আশুরা ইসলামের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা। এই দিনে মুসলমানের সুন্নি হিসেবে হযরত মুসা (আঃ) এর ঘটনা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রশ্নঃ মহরমের নতুন জিনিস কেনা যাবে কি?
উত্তরঃ মহরমের নতুন জিনিস কেনা নিয়ে কুরআনে ও হাদিসে কোন সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রশ্নঃ মহরম মাসে কি পড়তে হয়?
উত্তরঃ মহরম মাসে বেশি বেশি করে কোরআন করতে, তেলাওয়াত নফল ও নামাজ তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ মহরম মাসে কি করা উচিত নয়?
উত্তরঃ মহরম মাসে ব্যক্তির স্বার্থ উপর ভিত্তি করে বেশি বেশি দান-সদকা করা উত্তম।
প্রশ্নঃ মহরম মাসে বিয়ে করা কি হারাম?
উত্তরঃ মহরম মাসে বিয়ে করতে করতে কোন নিষেধ নেই। কিন্তু ইমাম হোসাইন মহরম মাসে শহীদ হয়েছেন বলে শিয়ারা বিয়ে করে না।
লেখকের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক, আমি আশাবাদী যে আপনি আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪ ও মহররম মাসের ফজিলত আল কাউসার সম্পর্কে বিস্তারিত পেয়েছেন। এছাড়াও আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানতে পেরেছেন মহরম কি, ১০ই মহররমের ইতিহাস, আশুরা কবে ২০২৪, মহরম কেন পালন করা হয় মুহাররম মাসের আমল এবং আশুরা ও মহররম মাসের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url