বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত
যারা প্রথম সন্তানের পিতা-মাতা হয়েছে সাধারণত তাদের জন্য বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত? এ সম্পর্কে জেনে রাখা জরুরী। যেহেতু প্রথম সন্তান অনেক সময় বিভিন্ন কারণে বাচ্চাকে ঠান্ডা লেগে থাকে। তখন বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত? এ সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা থাকে না। তাই আজকের এই আর্টিকেলে বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত? তা আলোচনা করা হবে।
আপনি যদি বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত? জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন দেরি না করে বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত? বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত
- বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত
- বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে যে সকল খাবার কখনো দেওয়া উচিত নয়
- শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
- সর্দি-কাশিতে বাচ্চাদের যেসকল খাওয়ানো উচিত
- শেষ কথা
বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত জেনে নিন
আমরা বাচ্চাদের এত যত্ন নিয়ে থাকি তারপরেও অনেক সময় দেখা যায় একটু ঠান্ডা লাগার কারণে বাচ্চাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা দেখা যায়। বিভিন্ন রকমের খাবার রয়েছে যেগুলো বাচ্চাদের খাওয়ালে ঠান্ডা সমস্যা আরো বৃদ্ধি পায়। বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত? এ সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই ধারণা রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ঘুম না আসার কারণ - রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম
খাবারের মধ্যে বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে খাওয়ানো উচিত। এ খাবার গুলো খাওয়ালে বাচ্চাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর হয়ে যায়।
আদাঃ সর্দি কাশি থেকে মুক্তি দিতে আধা এবং মধু খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আমরা জানি যে আদার অনেক ঔষধি গুন এর সাথে মধুর ও অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে যদি আদা এবং মধু একসাথে বাচ্চাকে মিশিয়ে খাওয়ানো যায় তাহলে বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
দুধ এবং হলুদ ও মধুঃ হলুদ এর মধ্যে রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। বাচ্চাদের কাশি কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে হলুদ। হলুদ এর সাথে যদি দুধ মিশিয়ে ভালোভাবে খাওয়া যায় তাহলে এটি বাচ্চাদের কাশি দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
সরিষার তেলঃ আমরা জানি যে সরিষার তেল ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করার জন্য ব্যবহার করা হয় কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে সর্দি কাশিতে ভোগে থাকেন তাহলে এক চামচ সরিষার তেল খেয়ে নিতে পারেন এতে করে সর্দি কাশি অনেকটা আরাম হবে।
লেবু ও মধুঃ লেবুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি। যদি বাচ্চাদের অতিরিক্ত পরিমাণে কাশি হয় তাহলে লেবু পানিতে এক চামচ মধু মিশিয়ে সে মিশ্রণটিকে বাচ্চাকে খাওয়াতে হবে। কারণ মধু শ্বাস যন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং বুক থেকে কফ দূর করতে সাহায্য করে।
মধু এবং গোলমরিচঃ মধুর অনেক ঔষধি গুন রয়েছে এবং এটি কাশি কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে তাই মধুর সঙ্গে সামান্য পরিমাণে গোলমরিচ গুঁড়ো করে সেটি বাচ্চাকে খাওয়ানো যেতে পারে। এ খাবার বাচ্চাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
হলুদঃ আমরা জানি যে মধুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওষুধিগুণ। মধু আমাদের গলা ভালো রাখতে সাহায্য করে। যদি এক বছরের বেশি বাচ্চাদের কাশির সমস্যা থাকে তাহলে হলুদ এবং মধু একসাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।
গরম সুপঃ বাচ্চাদের অতিরিক্ত পরিমাণে কাশি হলে গরম ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে। গরম শোক বাচ্চাদের কাশি কমাতে এবং গলা ব্যথা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে যে সকল খাবার কখনো দেওয়া উচিত নয়
একটু ঠান্ডা জনিত সমস্যা হলেই শিশুরা সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। যদি শীতকাল হয় তাহলে এ ধরনের সমস্যা একটু বেশি দেখা যায়। আমরা প্রতিদিন শিশুদের যে সকল খাবার দিয়ে থাকি সেগুলোর মধ্যে বেশ কিছু খাবার রয়েছে যা খেলে ঠান্ডা লাগার সমস্যা আরও বৃদ্ধি পায় তাই বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে যে সকল খাবার কখনো দেওয়া উচিত নয়? সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা রাখা উচিত।
বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে যে সকল খাবার কখনো দেওয়া উচিত নয়ঃ
- গরুর দুধ
- শসা
- টক জাতীয় ফল
- অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার
- দই জাতীয় খাবার
গরুর দুধঃ বাচ্চাদের যদি ঠান্ডা লাগার সমস্যা হয়ে থাকে এবং এর কারণে সর্দি কাশি হয় তাহলে গরুর দুধ খাওয়ানো যাবে না। দুগ্ধ জাতীয় খাবার যেমন চিজ, পনের অথবা সোয়া মিল্ক খাওয়ানো যেতে পারে।
শসাঃ আমরা জানি যে শসা হলো ঠান্ডা জাতীয় খাবার। তাই বিশেষ করে শিশুদের যদি ঠান্ডা জনিত সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে লাউ, শসা করলা কুমড়া এই খাবারগুলো খাওয়ানো যাবে না। বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে এ ধরনের সবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন - কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম
টক জাতীয় ফলঃ বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে টক জাতীয় খাবার খাওয়ালে এর পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পায় তাই বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে টক জাতীয় ফলগুলো খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে আঙ্গুর, কলা, লিচু, তরমুজ, ডাব এবং কমলালেবু জাতীয় খাবার খাওয়ানো যাবে না।
অতিরিক্ত মিষ্টি খাবারঃ বাচ্চারা অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে। শিশুদের অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগলে এবং সর্দি কাশি হলে অবশ্যই অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ানো যাবে না।
দই জাতীয় খাবারঃ আমরা জানি দই আমাদের শরীরের জন্য অনেক ঠান্ডা। তাই সর্দি কাশি অথবা ফুসফুসের সংক্রমণ হলে দই খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি লক্ষ্য রাখতে হবে।
শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত? যেহেতু বাচ্চাদের শরীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকে তাই শিশুদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। তাই একজন সতর্ক পিতা-মাতা হিসেবে শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা রাখতে হবে আমাদের।
শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়ঃ
১। সঠিকভাবে পোশাক পড়ে না থাকার কারণে অনেক সময় শিশুদের ঠান্ডা লাগার মত সমস্যা দেখা যায়। তাই সন্তানকে বিশেষ করে শীতের সময় মোটা কাপড় পরিয়ে রাখতে হবে ঠান্ডা জনিত সমস্যা থেকে নিজের মুক্ত হওয়ার জন্য।
২। শিশুকে সংক্রমণ প্রতিরোধের টিকা দিতে হবে। যেন শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং কোন ধরনের রোগ থাকে সংক্রমণ করতে না পারে।
৩। শিশুকে সুস্থ রাখার জন্য মায়ের বুকের দুধ সহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার চালিয়ে যেতে হবে। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়াতে হবে।
৪। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার খাবারগুলো খাওয়াতে হবে। যদিও শিশুরা অনেক সময় বিভিন্ন রকমের পুষ্টিকর খাবার খেতে চায়না কিন্তু তাদেরকে খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৫। অনেক সময় আমাদের সন্তানকে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু সংক্রমণ করার কারণে ঠান্ডা জনিত সমস্যার সর্দি কাশি লেগে থাকে। তাই সন্তানকে শিক্ষা দিতে হবে বাইরে থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। বাইরে থেকে আসার পরে মুখে অথবা চোখে হাত না দেওয়া।
সর্দি-কাশিতে বাচ্চাদের যেসকল খাওয়ানো উচিত
আমাদের সন্তানরা যখন অনেক ছোট থাকে সাধারণত তখন তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকে। যার ফলে একটুতেই তাদের অসুস্থ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তাই শিশুদের উপর বেশি যত্ন নিতে হবে যেন তাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা না হয়। সর্দি-কাশিতে বাচ্চাদের যেসকল খাওয়ানো উচিত? এ সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা রাখতে হবে।
আমরা ইতিমধ্যেই বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত এ সম্পর্কে জেনেছি। সাধারণত ঠান্ডা লাগলে বাচ্চাদের সর্দি কাশি হয়ে থাকে। তাই সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে উপরে উল্লেখ করা খাবারগুলো খাওয়ানো উচিত। কারণ এগুলো অনেক পুষ্টিকর এবং সর্দি কাশির জন্য উপকারী।
যেমন মধু, মধুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। সর্দি কাশি কমাতে মধু কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। শুধু বাচ্চাদের জন্য নয়। বড়রা যদি সর্দি কাশি অথবা ঠান্ডা জনিত সমস্যায় ভুগে থাকে তাহলে তাদের ক্ষেত্রেও মধু কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া আরো বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেমন আদা সরিষার তেল, লেবু, গোল মরিচ, হলুদ।
বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিতঃ শেষ কথা
বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়ানো উচিত? সর্দি-কাশিতে বাচ্চাদের যেসকল খাওয়ানো উচিত, শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়, বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে যে সকল খাবার কখনো দেওয়া উচিত নয়? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত তথ্যগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল বুস্ট করবেন
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো পড়তে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।১৬৮৩০
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url