রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ও ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়

ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন হু হু করে বেড়েই চলেছে। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যেই ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায় এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমানোর উপায় বিজ্ঞান খুঁজে পেয়েছে। সম্মানিত পাঠক বৃন্দ, আপনি যদি ডায়াবেটিস এবং রক্তে গ্লুকোজে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
 
ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
 

ভুমিকা

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বয়স্কদের পাশাপাশি তরুনদেরও নাম প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ফলে বাড়ছে হৃদরোগীর সংখ্যা। তবে বর্তমানে খুব সহজে প্রকৃতিক উপায়ে ডায়াবেটিস কমানো যায়। কিছু কিছু নিয়ম মাফিক চল্লে চিরস্থায়ী ডায়াবেটিস রোগ থেকে মুক্তি থাকতে পারবেন। আমৃত্যু ডায়াবেটিস এর রোগ থেকে মুক্তির প্রাকৃতিক উপায় এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমানোর উপায় নিয়ে আজকের এই পোস্ট।

ডায়াবেটিস কি? ডায়াবেটিস কেন হয়?

রক্ত গ্লুকোজ স্বাভাবিক অবস্থায় না থাকায় হচ্ছে ডায়াবেটিস। শরীরে যখন ঠিক মত ইনসুলিন গঠন করতে না পারলে বা সঠিকভাবে কার্যক্রম চালাতে না পারার নাম ডায়াবেটিস। তখন শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক এর তুলনায় বৃদ্ধি পায়। মানব দেহের কোষ গুলোতে গ্লুকোজের অনুপ্রবেশ করতে ইনসুলিন সাহায্য করে। অগ্ন্যাশয়ের গুরুত্বপূর্ণ কোষ হরমোন আই-লেটস থেকে ইনসুলিন গঠন হয়ে থাকে। খাবারে থাকা গ্লুকোজের রক্তের মাধ্যমে কোষে প্রবাহিত হয়। গ্লুকোজের শরীরে শক্তি উৎপন্ন করতে সহায়তা করে। ইনসুলিন কাজে ব্যহত গঠলে রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা থাকেনা। তখন শরীরে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়।

ডায়াবেটিস কত প্রকার ও কি কি

ডায়াবেটিস সাধারণত দুই ধরনের।
  1. টাইপ-১
  2. টাইপ-২
এছাড়াও গর্ভকালীল, নিওনাটাল, জেসটেসানাল ইত্যাদি ধরেন ডায়াবেটিস হতে পারে।

ডায়াবেটিস এর লক্ষন

টাইপ-১

টাইপ-১ ডায়াবেটিস সাধারণত বংশগত ভাবে হয়। যখন ইনসুলিন গঠন পুরোপুরি ধংস্ব হয়ে যায় তখন কৃত্রিম ইনসুলিন এর প্রয়োজন হয়। এই অবস্থা টাইপ-১ ডায়াবেটিস বলা হয়ে থাকে।
  • রোগীর দ্রুত ওজন কমে যায় 
  • ঘন গন গলা শুকিয়ে যায়
  • দৃষ্টিশক্তি কমে যায় 
  • ক্ষুধামন্দা লাগা
  • মাথা ও পেটে ব্যথা করা
  • শরীর অতিরিক্ত দূর্বল হয়ে যায়
  • ক্লান্তি অনিভব করা
  • খিটখিটে মেজাজ 
  • শরীরে অস্থিরতা 
  • চুলকানি দেখা দেয়
  • ঘন ঘন প্রসাবের চাপ

টাইপ-২

এই ধরনে ডায়াবেটিস সাধারণত ইনসুলিন গঠনে সক্ষম। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন গঠন করতে না পারাই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। টাইপ-১ এবং টাইপ-২ এর লক্ষন গুলো প্রায় এক হলেও টাইপ-২ এর লক্ষনে কিছুটা ভিন্নতা আছে। টাইপ-১ এর তুলনায় টাইপ-২ এর লক্ষন গুলো অত্যান্ত ধীর গতিতে প্রকাশ পায়।
  • কাটা বা ঘায়ের ক্ষত শুকাতে সময় লাগে।
  • দ্রুত মুখ শুকিয়ে যায় এবং ঘন ঘন পিপাসা।
  • দেহের ত্বক খসখসে ও শুষ্ক হয় যায়।
  • ওজন হ্রাস ও রোগা হয়ে যায়। 
  • মিষ্টি জাতীয় খাবার চাহিদা বৃদ্ধি পাই।
  • নাকে গন্ধ অস্বস্তি কর অবস্থা সৃষ্টি করে।
  • অনিয়মিত খাবারে রক্তে গ্লুকোজ কমে যায়। 
  • হাত ও পা ঝিনঝিনি অনুভুতি।
  • বগলে এবং গাড়ে কালো দাগ পর্যবেক্ষন।
  • ক্ষুদা লাগার তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়া।

ডায়াবেটিস এর স্বাভাবিক মাত্রা কত?

স্বাভাবিক অবস্থায় ডায়াবেটিস এর মাত্রা ৫.৫ মিলি মোল/লি বা এর কিছুটা কম বা বোশি হলে ভালো। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা যদি ৫.৫ - ৬.৯ মিলি মোল/লি এর ভিতর হয় তাহলে তাকে প্রি ডায়াবেটিস বলা হয়। রক্তে মানব দেহের স্বাভাবিক গ্লুকোজের মাত্রা হলো ৩.৩ - ৬.৯ মিলি মোল/লি (খাবার আগে) এবং খাবার পর এর মাত্রা ৭.৮ বা এর কম।

ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়

প্রকৃতিক বা ঘরোয়া ভাবে তৈরি কিছু খাবার দ্বারা ডায়াবেটিস কমানো সম্ভব। অনেক গবেষকদের গবেষনায় পাওয়া গেছে ডায়বেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়।
  • আদাঃ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে লবন দিয়ে আদা চিবিয়ে খেলে ডায়াবেটিস কমানো যায়। সুতরাং প্রাকৃতিক উপায়ে ডায়াবেটিস কমানোর জন্য প্রতিদিন আদা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • পেঁয়াজঃ পেঁয়াজ রক্তের শর্করা কমাতে কার্যকরী ভুমিকা রাখে। দৈনিক নিয়ম অনুযায়ী পেঁয়াজের নির্যাস খেলে শতকরা ৫০ ভাগ রক্তে নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম।
  • মেথিঃ প্রাকৃতিক উপায়ে ডায়াবেটিস কমানোর অন্যতম উপাদান হচ্ছে মেথি। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে ২ চামচ মেথি পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন। সকালে ১ গ্লাস মেথি ও মেথি পানি খাবেন। ইনসুলিন সতেজ করতে সাহায্যে মেথি। এমনকি শরীরের স্টার্চকে গ্লুকোজের পরিনত হতে বাধার সৃষ্টি করে। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
  • করলাঃ ডায়াবেটিস এর জন্য তিতা করলা অন্যতম ভুমিকা রাখে। ২-৩ টি তিতা করলা নিন। তারপর বীজ বাদ দিয়ে জুস বানিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ গ্লাস পানিতে মিশিয়ে ভালো উপকার পাবেন।
  • ডায়াবেটিস কমাতে নয়ন তারাঃ ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে নয়ন তারা গাছের ফুল ও শিকড়ের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। ১ গ্রাম শুকনো ফুল ও শিকড় হাফ গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিন। তারপর সেই পানি ভালো করে ছেঁকে নিন। নয়ন তারা ফুল ও শিকড়ের পানি দুই ভাগ করে সকালে এবং রাতে প্রায় ১০ দিন পান করতে থাতেন।
  • পনির ফুলঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পনির ফুলেন গুরুত্ব অপরিসীম। ১০ টি পনির ফুল ১ গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খাবার খাওয়ার পূর্বে সেবন করুন। পনির ফুলের পানি ইনসুলিন তে আরো সচল করতে সহায়তা করে।

আরো পড়ুনঃ দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায় বিস্তারিত জানুন

  • মিষ্টি কুমড়াঃ মিষ্টি কুমড়াতে থাকা ভিটামিন-এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল।.
  • সজনে পাতাঃ এন্টি ইনফ্লেমেটরি এবং এ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অক্সিডেন্ট সজনে পাতায় থাকে। যা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। শুকনো সজনে পাতার গুড়ো প্রতিদিন ১ গ্লাস পানিতে ১ চা চামচ মিশিয়ে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে।
  • দারচিনিঃ নিয়মিত দারচিনি চিবিয়ে খেলে ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। দারচিনিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট নতুন ইনসুলিন গঠন প্রক্রিয়াকে উজ্জীবিত করে।
  • ঢেঁরসঃ ঢেঁরসে থাকা ফাইভার দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ঢেঁরস কেটে গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ঢেঁরস ভিজা পানি সেবন করুন।.
  • আম পাতাঃ আম পাতার রস রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
  • এ্যালোভেরাঃ এ্যালোভেরাতে ফাইটোস্ট্যারলস পদার্থ থাকে। এি শক্তিশালী উপাদান ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। এ্যালোভেরার ম্যানন্যান্স লেকটিন, এ্যানথ্রাইকুইনো একত্রে যৌথ কাজ করে বলে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ডুমুরঃ নিয়মিত ডুমুর খেলে খুব সহজে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
  • নিয়মিত ব্যায়ামঃ দ্রুত গতিতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম করলে দেহের প্রতিটি কোষ ইনসুলিন তৈরি করতে এ্যাকটিভ থাকে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে। 

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমানোর উপায়

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে কিছু কার্যকারি উপায় আলোচনা করা হলঃ
  • চর্বি আছে, তৈল যুক্ত খাবার ও ফাস্টফুড ইত্যাদি এসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে পানি খাওয়া জরুরি। 
  • নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করুন।
  • ফাইবার জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে ।
  • ডায়াবেটিস এর মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে শর্করা জাতীয় খাবার কম করে খান।
  • মানসিক চাপ দ্রুত বৃদ্ধি করে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পরিমান মত খাবার গ্রহন করুন।
  • নিয়মিত শরীর চর্চা ডায়াবেটিস কমাতে উত্তম ভুমিকা পালন করে।

ডায়াবেটিস রোগীর প্রতিদিনের খাবারের তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীরা খাবার কমিয়ে দেওয়ায় দিন দিন দূর্বল হয়ে পরে। খাবার খাওয়া না কমিয়ে প্রতিদিন পরিমাণ মত খাবার খেলে শরীর এবং ডায়াবেটিস দুইটাই ভালো থাকে। নিচে ডায়াবেটিস রোগীর দৈনিক খাবার তালিকা দেওয়া হলঃ
  • চেরি ফল
  • নাসপাতি 
  • তরমুজ 
  • আপেল
  • বড়ই
  • কিউই ফল
  • আঙ্গুর ফল
ইত্যাদি খাবার প্রতিদিন নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং শরীর সুস্থ থাকবে ইনশাআল্লাহ। 

ডায়াবেটিস রোগীদের কি কি খাবার খাওয়া নিষেধ?

  • চর্বিঃ ডায়াবেটিস রোগীর দের অতিরিক্ত পরিমানে চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া নিষেধ। চর্বি জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে চাল, আটা, সুজি, ময়দা, মাছ, মাংস ইত্যাদি।
  • আমিষঃ অতিরিক্ত আমিষ জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের এরিয়ে চলা উচিত। যেসব খাবারে প্রোট্রিন সেসব খাবার না খাওয়ায় উত্তম। 
  • চা - কফিঃ ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে যাদের চা কফি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের এড়িয়ে চলা জরুরি। এসব খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিপদজনক।
  • এ্যালকোহল জাতীয় খাবারঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অ্যালকোহল জাতীয় খাবার স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারন। 
  • লবনঃ ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত লবণ খাওয়া বাদ দেওয়া জরুরি। অনেক খাবারের সাথে অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা লবন খাই এই রকম অভ্যাস ত্যাগ করা উত্তম। 
  • মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলাঃ ডায়াবেটিস রোগীের মিষ্টি জাতীয় খাবার মানে এক ধরনের বিষ হিসাবে কাজ করে। মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের খুব কম সময়ে এর বিষ ক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা বিভিন্ন ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। 

ডায়াবেটিস রোগী কত দিন বাঁচে?

অনেক প্রশ্ন করে থাকে ডায়াবেটিস রোগী কত দিন বাঁচে? আমাদের ধারনা ডায়াবেটিস হওয়া মানে মৃত্যুর দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। তবে সেটা ভুল, কারন বাঁচা-মরা শুধু মাত্র মাহান আল্লাহ তাওয়ালার কাছে। 
যেহেতু বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগ মরন ব্যাধি রোগ নয়। তাই ডায়াবেটিস রোগী যদি চিকিৎসকের পরামর্শ এবং গবেষকদের গবেষণা গুলো অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে তাহলে ডায়াবেটিস রোগী বেঁচে থাকবে বা মৃত্যু ঝুঁকি কমে যাবে ইনশাআল্লাহ।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমি আমার এই আর্টকেলের মাধ্যমে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সবকিছু জানানোর চেষ্টা করছে। ডায়াবেটিস কি এবং কেন হয়? ডায়াবেটিস কত ধরনের হয়ে থাকে? ডায়াবেটিস এর লক্ষন ডায়াবেটিস এর স্বাভাবিক মাত্রা, ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমানোর উপায়, ডায়াবেটিস রোগীদের কি কি খাবার খাওয়া যাবে না ডায়াবেটিস রোগী বাঁচা বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url