চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন - কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম

চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন ও কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম এ সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা বুঝতে পারবেন চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন ও কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম। চলুন তাহলে চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন ও কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন।
চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন - কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের জন্য নিচে ধাপে ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আর বিলম্ব না করে চলুন চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন - কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

    ভূমিকা

    যখনই আমরা আমাদের চুলে শ্যাম্পু করি আমাদের চুল ভালোভাবে পরিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু আপনি কি চুলে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করেন এটি এমন একটি প্রশ্ন যার উত্তর দেওয়া দরকার। অনেকেই কন্ডিশনার ব্যবহার করি কিন্তু জানি না এটি আমাদের চুলের জন্য কি করে। আবার আমরা অনেকেই জানিনা আমাদের চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করব। আমরা সবাই জানি শ্যাম্পু করার পরে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হয় এটি ছোটবেলা থেকে শিখে আসছি।

    এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করার আবার নিয়ম আছে নাকি এটি তো শ্যাম্পু করার পরে করতে হয় এ ধারণা থাকলে একদম ভুল ধারণা। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন - কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে।

    চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন - কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম

    চুলকে আরো সুন্দর ও ঝলমলে করার জন্য শ্যাম্পু করার পরে চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করে থাকি। বেশিরভাগ মানুষ কন্ডিশনার ব্যবহার নিয়ম জানেন না এর ফলে চুল আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। অনেকেই চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন ও কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম এ সম্পর্কে জানেনা। শ্যাম্পু করার পরে কন্ডিশনার ব্যবহার করার ফলে চুল অনেক সুন্দর যেমন হয়ে যায় তেমন নিয়মমাফিক কন্ডিশনার ব্যবহার না করলে চুল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

    কন্ডিশনার লাগানোর নিয়ম হলো চুলের মধ্যভাগ থেকে নিচের অংশে কন্ডিশনার লাগানো কোনমতে যেন মাথার অংশে কন্ডিশনার না যাই। চুল ভালো রাখার জন্য আমাদের অবশ্যই চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন - কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন - কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম।
    কন্ডিশনার ব্যবহার করা সঠিক নিয়ম-
    1. শ্যাম্পু- চুলে কন্ডিশনার ব্যবহারের আগে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। তারপর কয়েন বা পয়সার সমান কন্ডিশনার দুই তালুতে ঘষে নিন তারপর আঙ্গুরের সাহায্যে তা সম্পূর্ণ চুলে লাগান। কিন্তু মনে রাখবেন মাথার তালুতে যেন কন্ডিশনার না লাগে।
    2. ম্যাসাজ করুন ধীরে ধীরে- চুলে শ্যাম্পু করা হয়ে গেলে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ধীরে ধীরে কন্ডিশনার লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। মনে রাখবেন কন্ডিশনার মাথার স্কিনে যেন না লাগে। কন্ডিশনার কেবল চুলে ব্যবহারে উপযোগী মাথা ত্বকের জন্য নয়।
    3. কন্ডিশনার সেট করুন- কন্ডিশনার ব্যবহার করার পরে উপকার পান না অনেকেই তাই কন্ডিশনার লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে এটা ধুয়ে ফেলবেন না। চুলে কন্ডিশনার লাগানোর পর পাঁচ মিনিট বা তার অধিক সময় অপেক্ষা করতে হবে। সবশেষে ঠান্ডা জল দিয়ে কন্ডিশনার ধুয়ে ফেলুন। চুল মসৃণ ও কোমল অনুভব না হওয়া পর্যন্ত তা ধুতে থাকুন।
    4. কন্ডিশনার নির্বাচন- চুলের ধরন অনুযায়ী ভালো একটি কন্ডিশনার নির্বাচন করুন। কন্ডিশনার ব্যবহারের আগে চুলে শ্যাম্পু করে নিন। কন্ডিশনার ব্যবহারের আগে চুল থেকে জট কিছুটা ছড়িয়ে নিন। এরপর চুলের ধরন ও দৈর্ঘ্য অনুযায়ী কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
    5. ক্ষতিগ্রস্ত অংশ- কন্ডিশনার দেওয়ার সময় চুলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশে বেশি করে লাগান। সাধারণত চুলের গোড়ায় ব্যবহার করতে নিষেধ করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। কন্ডিশনার লাগানোর পর কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন এরপর ধুয়ে ফেলুন তবে ডিপ কন্ডিশনিং করার ক্ষেত্রে একটু বেশি সময় রাখুন।
    6. নিয়মিত কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন না- মাঝেমধ্যে এক এক দিন কন্ডিশনার না লাগালেও চলে যেতে পারে কিন্তু সাবধান এটা যেন অভ্যাসে পরিণত না হয়। কন্ডিশনার শ্যাম্পু করা চুলে আর্দ্রতা জাগিয়ে চুলে নরম আর উজ্জ্বল করে তোলে। কন্ডিশনার লাগানো চুলে জট পরে তাই আচড়ানো সহজ।

    কখন কন্ডিশনার করা সব থেকে ভালো

    স্বাস্থ্যকর, সুন্দর ও সিল্কি চুলের জন্য অনেকে শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার ব্যবহার করেন। কন্ডিশনার মূলত চুলের আগার যত্ন নেয়। সঠিক উপায়ে কন্ডিশনার ব্যবহার না করলে তা অতিরিক্ত চুল ঝরার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেই মনে করেন শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার সবচেয়ে ভালো। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে এমন যে শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার লাগালে তা চুলে থেকে যায়। যার ফলে অনেকে ধারণা করে চুলে কন্ডিশনার আগে লাগানো অনেক বেশি উপকারী।
    চুলের হারিয়ে যাওয়া পুষ্টিগুণ ফিরে পেতে কন্ডিশনিং হলো অব্যর্থ উপায়। দৈনন্দিন ব্যস্ততায় নিয়ম মেনে কন্ডিশনার ব্যবহার করা হয় না। অনেকে মনে করেন ভেজা চুলে কন্ডিশনার লাগিয়ে কয়েক মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলে কাজ হয়ে গেল। কন্ডিশনার এর ব্যবহার কিন্তু এত সহজ নয়। শ্যাম্পু পরে কন্ডিশনার এর ব্যবহার সবচেয়ে ভালো তেমনটাই মনে করেন অনেকে। এই ধারণাটি ভুল নয়, আবার একদম সঠিক ও নয়। শ্যাম্পু করার আগে চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করা যেতে পারে। আসলে চুলের ধরন বুঝে কন্ডিশনার করতে হয়। আমাদের ভেতরে অনেকের এমন চুল রয়েছে যাদের প্রথমে কন্ডিশনার করার ফলে চুল বেশি সুন্দর ও শাইনিং দেখায়। আবার অনেকে এমন রয়েছে যাদের আগে কন্ডিশনার করার ফলে চুল খারাপ হয়ে যায়।

    চুলের জন্য সঠিক কন্ডিশনার বেছে নেবেন কিভাবে

    চুল পরিচর্যা রুটিনে হেয়ার কন্ডিশনার এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে মাঝে মাঝে হেয়ার কন্ডিশনার নিয়ে আফসোস করে ফেলি আমরা। শ্যাম্পুর রেঞ্জ অনুযায়ী কন্ডিশনার কি নিব আবার অনেক সময় হাতের কাছে যেটা পাওয়া যায় সেটাই মেখে নিই। কিন্তু তাতে চুলেরই ক্ষতি হয় আসলে নিয়মটা হলো শ্যাম্পু কিনতে হবে আপনার চুলের ধরনের ওপর অর্থাৎ তেলতেলে অথবা শুকনো ইত্যাদি। শ্যাম্পুর ওপর ভিত্তি করে আর চুলের উপর ভিত্তি করে কন্ডিশনার কিনতে হবে। চুলের ধরনের ভিত্তিতে সঠিক কন্ডিশনার বেছে নিতে পারলে তা চুলের অনেক সমস্যার সমাধান করে দেয়। চুলে জট ছাড়ানো, চুলের চকচকে ভাব বাড়ানো এসবই করে কন্ডিশনার। চলুন এবার জেনে নেয় চুলের জন্য সঠিক কন্ডিশনার বেছে নেবেন কিভাবে।
    চুলের জন্য সঠিক কন্ডিশনার বেছে নেবেন কিভাবে-
    1. তেলতেলে, নির্জিব চুল- চুল তেলতেলে হলে মাঝেমধ্যে কন্ডিশনার বাদ দিলেও ক্ষতি নেই। এমনটাই মনে করেন অনেকে আসলে সত্যিটা হল কন্ডিশনার মাখার পরও যদি চুল তেল তেলে লাগে তার কারণ হয় আপনি ভুল কন্ডিশনার ব্যবহার করেছেন অথবা কন্ডিশনার চুল থেকে ঠিকমতো ধোয়া হয়নি। যেসব প্রোডাক্টটের লেভেলে হাইড্রেটিং বা মশ্চারাইজিং এর মত শব্দ লেখা থাকবে তা এড়িয়ে যান। এর বদলে বেছে নিন এমন প্রোডাক্ট যার লেভেলে ভ্যালুমাইজিং এর মত শব্দ লেখা রয়েছে। এছাড়া চুলের কন্ডিশনার অন্তত ৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ধুতে হবে।
    2. শুকনো, নিষ্প্রাণ চুল- চুল শুকনো বিবর্ণ হলে তাতে আর্দ্রতা ফেরানোই মূল লক্ষ্য। এমন প্রোডাক্ট খুঁজে নিন যাতে মশ্চারাইজিং হাইড্রেটিং এর মত সুবিধা রয়েছে। চুলের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে যেসব প্রোডাক্ট তৈরি হয় তাও ব্যবহার করতে পারেন। এসব প্রডাক্ট চুলের আর্দ্রতার মাত্রা ধরে রাখে চুল নেতিও যায় না। কন্ডিশনিং ও চুলের পক্ষে খুব উপকারী মাসে অন্তত দুবার শ্যাম্পু করার পাশাপাশি কন্ডিশনার লাগালে শুকনো ভাব কার্যকারী ভাবে ঠেকানো যায়।
    3. ক্ষতিগ্রস্ত, রুক্ষ চুল- আপনার চুল যদি অতিরিক্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে এমন প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন যাতে চুলের ক্ষতি মেরামত করে এবং রুক্ষতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করা চুলের জন্য যেসব প্রোডাক্ট তৈরি হয় সেসব রুক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য খুব ভালো কাজ করে। অর্গান অয়েল বা নারিকেল তেলের মত উপাদান চুল মজবুত করে ফিরিয়ে আনে চুলের স্বাস্থ্য।

    চুলের কন্ডিশনার ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা

    চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন - কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম এটা জানার সাথে সাথে আমাদের এটাও জানা জরুরি যে চুলের কন্ডিশনার ব্যবহার করার সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে। মাথার ত্বকের মৃত কোষ ঘাম এবং অন্যান্য পণ্যগুলি ধুয়ে ফেলার জন্য শ্যাম্পু ব্যবহার করার পরে চুলকে নরম ও মোচন করতে একটি কন্ডিশনার ব্যবহার বা প্রয়োগ করা হয়। কন্ডিশনার আমাদের চুলের যেমন সুবিধা দিয়ে থাকে তেমন অসুবিধাও দিয়ে থাকে চলুন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

    চুলে কন্ডিশনার ব্যবহারের সুবিধা-
    1. চুল ময়শ্চারাইজ করে বিশেষ করে শুষ্ক শীতের মাস গুলিতে।
    2. গিট গঠন এবং চুলচট রোধ করে যার ফলে ধোয়ার পরে ভাঙ্গন সীমিত হয়।
    3. চুল ভেঙ্গে যাওয়ার মতো চুলের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
    4. চুলের স্ট্যান্ডগুলি পুনরায় পূরন এবং শক্তিশালী করে চুলের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।
    5. লিভ ইন কন্ডিশনার স্টাইলিং স্প্রে এবং ড্রায়ার এর মত টুল থেকে চুলের ক্ষতি প্রতিরোধ করে।
    চুলের কন্ডিশনার ব্যবহার করার অসুবিধা-
    1. চুলের প্রকারের সাথে মেলে না এমন কন্ডিশনার ব্যবহার করলে উপকারের চেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে। কোকড়ানো চুলের লোকদের একটি শক্তিশালী কন্ডিশনার প্রয়োজন যাদের পাতলা চুল তাদের পুষ্টির জন্য একটি মৃদু কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত।
    2. কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে অনেক রকমের কন্ডিশনার চুলের সাথে বন্ধন করে না বন্ধন ছাড়া কন্ডিশনার চুলে আর্দ্রতা এবং শক্তি প্রদান করতে ব্যর্থ হয়।
    3. মাথার ত্বকে কন্ডিশনার প্রয়োগ চুলের শিকড়কে হালকা করে তুলতে পারে এবং চুল চ্যাপ্টা হতে পারে।
    4. কিছু কন্ডিশনার এ সিলিকন, সোডিয়াম লরেথ, এবং সেন্টিমোনিয়াম ক্লোরাইড থাকে যা চুলের ক্ষতি করতে পারে এবং ত্বকের এলার্জির প্রক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
    আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা খুব সহজেই বুঝতে পেরেছেন চুলে কন্ডিশনার কিভাবে ব্যবহার করবেন - কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন এবং তাদেরকেও পড়ার সুযোগ করে দিতে পারেন। এরকম সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। আর্টিকেলটি সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url