বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। অনেকেই বিয়ের সম্পর্কে জানতে চান। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আর্টিকেলটি ভালোভাবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি এ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বিয়ে মানুষের জীবনে সামাজিক বন্ধন। আর এই বিয়ে সঠিকভাবে করার জন্য বিয়ে করার সহজ উপায় বিয়ের নিয়ম নীতি সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তাহলে আর দেরি না করে বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি
বিয়ে একটি পরিবার গঠনের প্রথম ধাপ। মূলত সৃষ্টিকর্তা ভাবে নারী পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। নারী ছাড়া পুরুষ যেমন চলতে পারে না তেমন পুরুষ ছাড়া নারীর জীবন অসম্পূর্ণ। বিয়ের মাধ্যমে মানুষের নিঃসঙ্গতা ও একাকীত্ব দূর হয়। আর এই বিয়ের সঠিকভাবে পড়ানোর জন্য বিয়ে করার সহজ উপায় ও বিয়ের নিয়ম নীতি সম্পর্কে জানতে হবে। বিভিন্ন ধর্মের বিয়ে বিভিন্ন রীতিনীতিতে হয়ে থাকে। বিয়েতে কনে এবং কনের অভিভাবকের সম্মতি প্রয়োজন হয় তেমনি বর ও বরের অভিভাবকেরও সম্মতি প্রয়োজন হয়ে থাকে।
বিয়ে একটি মানবিক প্রয়োজন। মহান আল্লাহ তায়ালার বিধানও বটে। মূলত দৃষ্টিগত ভাবে নারী-পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। নারী ছাড়া পুরুষ এবং পুরুষ ছাড়া নারীর জীবন অসম্পূর্ণ। মানুষের নিঃসঙ্গতা ও একাকীত্ব দূর হয়। জীবনের সুখ প্রশান্তি ও আনন্দের ধারা বয়ে যায় বিয়ের মাধ্যমে। বাস্তব জীবনে বিয়ের গুরুত্ব কি বলার অপেক্ষা রাখে না। আল্লাহ তাআলা হযরত আদম (আ)-কে সৃষ্টি করার পর হযরত হাওয়া (আ)-কে তার জীবন সঙ্গিনী রূপে সৃষ্টি করেন। তাদের বিয়ের মাধ্যমে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে দেন। সেই ধারাবাহিকতা এখনো পৃথিবীতে চলমান।
বিবাহ বলতে কি বুঝায়
বিবাহ বা বিয়ে হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে দুজন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বিয়ে হল পরিবার গঠনের প্রথম ধাপ। বিয়েকে ইসলাম ধর্মে সুন্নত বলা হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে ও একজন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বিবাহের মাধ্যমে তাদের দাম্পত্য জীবন শুরু হওয়াকে বিবাহ বলে। বিভিন্ন দেশে সাংস্কৃতি ভেদে বিবাহের সংজ্ঞার তারতম্য থাকলেও সাধারণত ভাবে বিবাহ এমন একটি প্রতিষ্ঠান যার মাধ্যমে দুজন মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও যৌন সম্পর্ক সামাজিক স্বীকৃতি লাভ করে। বিবাহের মাধ্যমে একটি জাতি অগ্রসর হয়ে থাকে। সঠিকভাবে এই বিবাহ সম্পন্ন করার জন্য আমাদের বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকা খুবই জরুরী।
বিয়ে করার সহজ উপায়
বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি সম্পর্কে আমাদের সবাইকে জানতে হবে। বিয়ে মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। চারিত্রিক পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য অন্যতম মাধ্যম। হালাল ও পবিত্র বংশধারা বজায় রাখার জন্য বিয়ের বিকল্প নেই। এটি নবীদের সুন্নত। তাই বাবা-মা অভিভাবকের উচিত সন্তানদের বিয়ের উপযুক্ত হলে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা। আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বিয়ে করতে পারছে না ফলে তারা হতাশায় ভোগে। নিম্নে সহজে বিয়ে হওয়ার জন্য কিছু করণীয় তুলে ধরা হলো।
পবিত্র জীবনযাপনের লক্ষ্যে বিয়ের বাসনা করা- প্রতিটি কাজের আগে সে কাজের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ঠিক করতে হয়। উদ্দেশ্য ভালো হলে সে কাজে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়। বিয়ের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। কেউ যদি বিয়ের মাধ্যমে পবিত্র জীবন যাপন করার উদ্দেশ্যে বিয়ে করতে আগ্রহী হয় তবে সে মহান আল্লাহর সাহায্য পাবে।
গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা- বিয়ের আগের সময়টা যুবকদের জন্য অনেক স্পর্শকাতর। এই সময় শয়তান যুবক ও যুবতীদের বিভিন্নভাবে ধোকা দেওয়ার চেষ্টা করে। তাই বিয়ের আগে নিজেকে গুনাহ থেকে বিরত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। যুবক ও যুবতী যদি দ্বীনদার হয় তবে অন্য দ্বীনদার সচেতন পরিবার তাদের সঙ্গে আত্মীয়তা করতে আগ্রহী হবে।
নিজেদের সক্ষম পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া- বেশিরভাগ মানুষ বিয়ের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান বিবেচনা না করে নিজেদের চাইতে বড় পরিবার কিংবা এমন মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিতে থাকে যারা এই পরিবারের মেয়ে বিয়ের সম্মোধন হবে না। তাই বিয়ের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান বিবেচনা করে সক্ষম কোন দ্বীনদার পরিবারে বিয়ে করার চেষ্টা করা আবশ্যক।
সামর্থ্য অর্জনের পাশাপাশি রোজা রাখা- কেউ বিয়ে করতে আগ্রহী হলে তার উচিত বিয়ে করার সামর্থ্য ও যোগ্যতা অর্জন করা। কারণ ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী অযোগ্য সঙ্গে কেউ আত্মীয়তা করবে না। যতদিন তা অর্জন না হয় তারা রোজা রাখতে পারি ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাদের সাহায্য করবেন।
দোয়া করা- সহজে বিয়ে হওয়ার জন্য বেশি বেশি সালাতুল হাজত নামাজ পড়ে দোয়া করা যেতে পারে।
বিয়ের নিয়ম নীতি
বিয়ে আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত।আরেকটি সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি এ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। চারিত্রিক অবক্ষয় রোধের অনুপম হাতিয়ার। চারিত্রিক ও আদর্শ পরিবার গঠন মানুষের জৈবিক চাহিদা পূরণ ও মানসিক প্রশান্তি লাভের প্রধান উপকরণ হলো বিয়ে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, আল্লাহর নির্দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো তিনি তোমাদের মধ্য থেকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জীবনসঙ্গিনী যাতে তোমরা তাদের নিকট প্রশান্তি লাভ করতে পারো এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। বিয়ের যাবতীয় নিয়ম-কানুন এবং বিধান-শর্ত ও আনুষাঙ্গিক বিষয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক।
ইসলামে বিয়ের রুকন বা মৌলিক ভিত্তি-
বর কনে উভয়ে বিয়ের সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্ত হওয়া।
প্রস্তাবনা এটি হচ্ছে বরের কাছে মেয়ের অভিভাবক বা তার প্রতিনিধির পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব উপস্থাপন করা। যেমন, আমি অমুক কে তোমার কাছে বিয়ে দিলাম অথবা এ ধরনের অন্য কোনভাবে প্রস্তাব পেশ করা।
কবুল বা গ্রহণ করা এটি বর বা তার প্রতিনিধির সম্মতিসূচক বাক্য।
বিয়ের শুদ্ধ হওয়ার শর্ত-
বর কনে উভয়কে গ্রহণযোগ্য ভাবে নির্দিষ্ট করে নেয়া।
বর-কনে একে অন্যের প্রতি সন্তুষ্ট হওয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, স্বামীহারা নারী (বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত) কে তার সিদ্ধান্ত ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না। কুমারী মেয়েকে তার সম্মতি ছাড়া বিয়ে দেওয়া যাবে না।
বিয়ের আকদ (চুক্তি) করানোর দায়িত্ব মেয়ের অভিভাবক কে পালন করতে হবে। যেহেতু আল্লাহতালা বিয়ে দেয়ার জন্য অভিভাবকদের প্রতি নির্দেশনা জারি করেছেন। আল্লাহ তা'আলা বলেন, আর তোমরা তোমাদের মধ্যে অবিবাহিত নারী-পুরুষদের বিবাহ দাও।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে নারী তার অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করবে তার বিবাহ বাতিল, তার বিবাহ বাতিল, তার বিবাহ বাতিল, তিনি তিনবার উচ্চারণ করেছেন।
বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।
বিয়ের প্রচারণা নিশ্চিত করা জরুরী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।
নিজে নিজে বিয়ে করার নিয়ম
নিজে নিজে বিয়ে করার নিয়ম বলতে কি বুঝানো হয়েছে নিজের বিয়ের খুতবা নিজে পড়া যায় এতে কোন সমস্যা নেই। আর এর যোগ্যতা হল আরবি শুদ্ধভাবে পড়তে পারি। তবে অনেক সময় দেখা যায় কাউকে না জানিয়ে শুধু ছেলে ও মেয়ে নিজেরা একে অপরকে পছন্দ করে বিয়ে করে ফেলে। মেয়ে বলে থাকে যে আমরা আল্লাহকে সাক্ষী রেখে দুজনে বিয়ে করেছি। আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করলে তার সংঘটিত হবে না। ইসলামের দিকনির্দেশনা হচ্ছে বিয়ের জন্য সাক্ষী শর্ত। সাক্ষী ছাড়া বিয়ের সংঘটিত হবে না আর বিয়ে হলেও তা বৈধ হবে না। হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তারা হল ব্যভিচারিনী যারা সাক্ষী ছাড়া নিজেরাই নিজেদের বিবাহ করে নেয়।
সময়ের গতিবাধায় অনেক কিছু বদলেছে। বর্তমান সময়ে অনেকে বিরাট আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিয়ে করে থাকেন আবার অনেকে কোর্ট ম্যারেজ সহ নানা ধরনের স্বল্প পরিষদ বিয়ের আয়োজন করে থাকেন। তবে কোন নারী ও পুরুষ সাক্ষী ছাড়া শুধু আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করলে সে বিয়ের সংঘটিত হবে না। আর পরেও যদি কোন নারী ও পুরুষ নিজে নিজে বিয়ে করে তাহলে যেন সাক্ষী সহ বিয়ে সম্পন্ন করে। নিজে নিজে বিয়ে করার নিয়ম হলো-ছেলে মেয়েকে প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধি জ্ঞান সম্পন্ন মুসলমান হতে হবে। ছেলে মেয়ে নিয়ে সম্মতিতে ইজবা-কবুল বলবে এবং উভয়ে পরস্পর নিজ নিজ কানে শুনতে হবে। নিজে নিজে বিয়ে করলেও বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি সকল বিষয় মেনে বিয়ে করতে হবে।
বিয়ে নিয়ে ইসলামিক স্ট্যাটাস
বিয়ে নিয়ে অনেকেরই কৌতূহলের শেষ নাই। বিয়ে একটি সামাজিক বন্ধন। অনেকেই বিয়ে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ইসলামিক স্ট্যাটাস লিখে থাকেন। তার ভেতরে কিছু তুলে ধরা হলো।
বিয়ে নিয়ে ইসলামিক স্ট্যাটাস হল-
একজন ভালো স্বামী একজন ভাল স্ত্রী তৈরি করে।
একটি সফল বিবাহ হল একটি ইমারত যা প্রতিদিন পূর্ণনির্মাণ করা আবশ্যক।
বিয়ে মানে বয়স নয়, এটি সঠিক ব্যক্তির সন্ধান সম্পর্ক।
আমার স্ত্রী আমার আত্মার সঙ্গী আমি তাকে ছাড়া থাকতে কল্পনা করতে পারি না।
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই সে বিয়ে বেশি বরকত পূর্ণ হয় যে বিয়েতে খরচ কম হয়।
স্বামী স্ত্রী একে অপরের পরিপূরক, একজন ব্যতীত অন্য জনের কষ্টকর।
বিয়ে একটি জুয়া খেলা, পুরুষ বাজিয়ে রাখে স্বাধীনতা আর নারীবাদী রাখে সুখ।
দুজনের মধ্যে পারস্পারিক ভালোবাসার জন্য বিবাহের চেয়ে উত্তম আর কিছু নেই।
বিয়ে করার অর্থ হচ্ছে নিজের অধিকারের অর্ধেক করে নেওয়া এবং কর্তব্যের দ্বিগুণ করা।
মানুষের একটা বয়স আছে যখন সে চিন্তা না করিয়াও বিবাহ করতে পারে। সে বয়স পেরোলে বিবাহ করিতে দুঃসাহসিকতার দরকার হয়।
বিয়ে হচ্ছে বুদ্ধির কাছে কল্পনার জয় আর দ্বিতীয় বিয়ে হচ্ছে অভিজ্ঞতার কাছে আসার জয়।
বিবাহ হচ্ছে নারীর জন্য খুব সাধনার একটি জীবিকা, সম্ভবত এক্ষেত্রে অনিচ্ছা সত্ত্বেও জনকর্মের পরিমাণ পতিতাবৃত্তির চেয়ে বেশি।
বিবাহের সাথে তিনটি ঋণ জড়িত এনগেজমেন্ট রিং, ওয়েডিং রিং এবং সাফারিং বা ভোগান্তি।
বিবাহিত পুরুষ অবিবাহিত পুরুষের চেয়ে বেশি দিন বাঁচে। কিন্তু বিবাহিত পুরুষদের মরার ইচ্ছা বেশি।
ভালোবাসার মায়া শুধুমাত্র বিয়ের মাধ্যমে কাটানো সম্ভব।
ইসলামে বিয়ে করার নিয়ম
বিবাহ সুন্নত সম্মত পদ্ধতিতে হওয়ার বাঞ্চনীয়। বিবাহ সুন্নসম্মত নাহলে এর সওয়াব ও বরকত থেকে বঞ্চিত হয় বর-কনে এবং সংশ্লিষ্ট সবাই। ইসলামে বিবাহ মসজিদে ও জুম্মার দিন হওয়া উত্তম। এতে ঘোষণা ও জনসমাগম বেশি হয়। তবে অন্যদিনও অন্যস্থানে বিবাহ পড়ানো যায়। ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি সম্পর্কে, চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ইসলামের বিয়ে করার নিয়ম সম্পর্কে।
প্রথমে কোনের কাছ থেকে ইজন বা অনুমতি দিতে হবে। বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রী বা বর- কনে মুখ্য। তাই বিয়ের আগে তাদের সম্মতি থাকতে হবে। সম্মতি না থাকলে কোন অবস্থায় ছেলে মেয়েকে বিয়েতে বাধ্য করা উচিত নয়। আল্লাহ বলেন, হে ঈমানদাররা! তোমাদের জন্য বৈধ নয় যে তোমরা বলপূর্বক নারীদের উত্তরাধিকারী হবে। (সূরা নিসা, আয়াত: ১৯)। আবু সালাম (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু হুরাইয়া (রা.) তাদের কাছে বর্ণনা করেন যে নবী (সা.) বলেছেন- কোন বিধবা নারীকে তার সম্মতি ছাড়া বিয়ে দেওয়া যাবে না এবং কুমারী নারীকে তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারবে না।
বিবাহের যদি বর-কনে রাজি থাকে কাজী বিয়ে পড়ানোর সময় বিবাহের ক্ষেত্রে অভিভাবকের অনুমতি নিতে হবে। বিশেষ করে মেয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবকের অনুমতি একান্তভাবে আবশ্যক।কারণ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিবাহ হয় না। নবী (সা.) বলেছেন- অভিভাবক ছাড়া কোন বিবাহ নেই (তিরমিজি, হাদিস:১১০১)।
যিনি বিয়ে পড়াবেন তিনি উপস্থিত মজলিসে হবু বরের উদ্দেশ্যে বলবেন যে অমুকের মেয়ে অমুককে এত টাকা মোহরানায় আপনার কাছে বিবাহ দিলাম, আপনি বলুন 'কবুল' বা 'আমি গ্রহণ করলাম'। বিবাহ পড়ানোর সময় কমপক্ষে দুজন সাক্ষী থাকতে হবে। তখন বড় উচ্চস্বরে 'কবুল' অথবা 'আমি গ্রহণ করলাম' বা সম্মতিসূচক 'আলহামদুলিল্লাহ' বলবেন। এরূপ তিনবার বলা উত্তম (বুখারী, হাদিস:৯৫) স্মরণ রাখতে হবে যে আগে খুতবা পাঠ করতে হবে তারপর ইজবা-কবুল (প্রস্তাব দেওয়া নেওয়া)। শুধু বরকে কবুল বলতে হবে। কনের কাজ থেকে কোন অভিভাবক শুধু অনুমতি নিবেন। বর বোবা হলে সাথীদের উপস্থিতিতে ইশারা বা লেখার মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন হতে পারে।
পালিয়ে বিয়ে করার নিয়ম
বিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই আমাদের বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি এ সকল বিষয় মাথায় রাখতে হবে। বিয়ের মাধ্যমে শুধু দুটো মানুষের মিলনকেই বোঝানো হয় না বরং দুটো পরিবার এবং সামাজিক মিলন বন্ধন কেউ শক্ত করে তোলে। বিয়ে যে অবশ্যই একটি ভালো বিষয় তার কোন ভুল নেই। তবে বিয়ে করার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে সকল কাজ সম্পাদনা করতে হবে। অনেকেই পালিয়ে বিয়ে করে থাকেন। পালিয়ে বিয়ে করলে আপনাকে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিবাহ করতে হবে। সেখানে অবশ্যই দুজন সাক্ষী ও কাবিননামা অনুযায়ী ফি ও উকিল স্ট্যাম্প ফি ইত্যাদি নিয়ে যেতে হবে। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জাতীয় পরিচয় পত্র/ জন্ম নিবন্ধন/ এইচএসসি সনদ, ছেলে ও মেয়ের দুই কপি করে ছবি প্রয়োজন হবে। কোর্ট ম্যারেজ করতে হলে বয়স কত লাগে এ সম্পর্কেও জানা উচিত।
সাধারণত কোর্ট ম্যারেজ ছেলের বয়স ২১ হতে হবে ও মেয়ের বয়স ১৮ হতে হবে। এর কম যদি হয় তাহলে কন্ডিশনাল বিবাহ করা যাবে বিবাহ পরবর্তী সময়ে তারা একত্রে থাকতে পারবে না। সম্পূর্ণভাবে বয়স হলে কেবল একসাথে থাকতে পারবেন। আপনি যদি পালিয়ে বিয়ে করে কোট ম্যারেজ করেন তাহলে বিবাহ সনদ আপনার উকিল এর মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে। আপনি যে উকিলের মাধ্যমে আপনার ম্যারেজ সম্পন্ন করেছেন তার কাছ থেকে ম্যারেজ রেজিস্টার সার্টিফিকেট নিতে হবে। বিয়েতে কমপক্ষে তিনজন সাক্ষী প্রয়োজন। যদি তিনজন না পাওয়া যায় তাহলে দুজন একজন মহিলা ও একজন পুরুষ সাক্ষী রাখা যাবে। পারিবারিক হোক বা পালিয়ে বিয়ে করা হোক সে ক্ষেত্রে বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি এ সকল বিষয় অবলম্বন করে বিবাহ সম্পন্ন করতে হবে।
মসজিদে বিয়ে করার নিয়ম
ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি সম্পর্কে, চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক মসজিদে বিয়ে করার নিয়ম সম্পর্কে। বিয়ের মাধ্যমে দুটি পরিবারের এবং দুটি মানুষের খুব সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় এমন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে বিয়ে হয়ে গেছে কঠিন এবং অন্যান্য পাপের কাজগুলো হয়ে গিয়েছে সহজ। বিভিন্ন মাওলানা বা মুফাসসিরে কুরআন বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলের বর এবং কোনে প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাদের বিয়ের জন্য তাগাদা প্রদান করছে এবং এ বিষয়ে অভিভাবককে অনেকে উৎসাহিত প্রদান করে।
মসজিদে বিয়ে করলে আলাদা ভাবে কোন সওয়াব পাওয়া যাবেনা এমনটাই জানা গিয়েছে। তবে মসজিদে বিয়ে করলে সেখানে একজন মাওলানা উপস্থিত থাকবেন এবং তিনি এ বিবাহের কাজ খুব সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করতে পারেন। এই বিবাহের অনুষ্ঠানে বর পক্ষে লোকজন এবং বোনের পক্ষের লোকজন উপস্থিত থাকবে। সেখানে সকল পক্ষ উপস্থিত থাকার পর বিবাহের যে রীতিনীতি রয়েছে সেগুলো খুব সুন্দর ভাবে পালন করা হবে এবং উভয় পক্ষের কবুল বলার মাধ্যমে বিবাহের কাজ সম্পন্ন করা হবে এবং দোয়া পড়ার মাধ্যমে তাদের জন্য দোয়া করা হবে।
আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা খুব সহজেই বুঝতে পেরেছেন বিয়ে করার সহজ উপায় - বিয়ের নিয়ম নীতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন এবং তাদেরকেও পড়ার সুযোগ করে দিতে পারেন। এরকম সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ২৪১৪১
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url